অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসা শেষে অবশেষে বাসায় ফিরেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গত কয়েকদিন ধরেই নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা চলছিল। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যেও তৈরি হয় উদ্বেগ। অবশেষে চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে অবস্থানকালে চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেন এবং একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত করেন যে আপাতত তিনি শঙ্কামুক্ত। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, আপাতত বিশ্রাম নেওয়ার জন্য চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশে ফেরার পরই রাত ১১টা পর্যন্ত তিনি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি গুরুতর হয়ে উঠলে গভীর রাতে দ্রুত তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তির সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, বৈঠকের এক পর্যায়ে হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর জানান, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে এই শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। নিয়মিত ওষুধ, বিশ্রাম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখলে তিনি দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
দলীয় নেতারা জানান, অসুস্থ অবস্থাতেও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন মির্জা ফখরুল। হাসপাতালের শয্যা থেকেও তিনি দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে খোঁজখবর রাখছিলেন। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে দেশের রাজনীতির টানাপোড়েনের সময় বিএনপি মহাসচিবের অসুস্থতা দলের জন্য বড় ধরনের অস্বস্তি তৈরি করেছিল। তবে চিকিৎসকদের দেওয়া সর্বশেষ বার্তায় দলের ভেতরে নতুন স্বস্তি ফিরেছে।
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপাতত গণমাধ্যম বা রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। চিকিৎসকরা তাকে বিশ্রামে থাকার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তিনি বাসায় থেকেই ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে দলীয় কর্মকাণ্ডের খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
দেশজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা মহাসচিবের সুস্থ হয়ে ফেরায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তার দ্রুত আরোগ্যের জন্য শুভকামনার বন্যা দেখা গেছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলেই তিনি আবারও সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন।
এই ঘটনার পর স্পষ্ট হয়েছে, স্বাস্থ্যগত কারণে মির্জা ফখরুলকে এখন আরও বেশি সাবধান হতে হবে। কারণ, সামনের দিনগুলোতে তাকে রাজনৈতিক মাঠে আরও সক্রিয় থাকতে হবে। দলের ভেতরে তার নেতৃত্বে নতুন উদ্দীপনা সঞ্চার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।