close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

‘হাসিনাকে দিয়েই শুরু করুন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Indian MP Asaduddin Owaisi sparked controversy by saying that the repatriation of illegal Bangladeshis should begin with ousted Prime Minister Sheikh Hasina, who is currently living in India. His stat..

ভারতের সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি মন্তব্য করেছেন, অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু করতে হলে ভারতের মাটিতে থাকা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই প্রথমে ফেরত পাঠানো উচিত। এ বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তীব্র আলোচনা।

ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন হায়দরাবাদ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি মন্তব্য করেছেন, অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু করতে হলে ভারতের মাটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েই সেই প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

সম্প্রতি ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আয়োজিত আলোচিত অনুষ্ঠান আইডিয়া এক্সচেঞ্জ-এ ওয়েইসি এই বক্তব্য দেন। ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। সেখানে হাসিনা-সংক্রান্ত প্রসঙ্গটি উঠে আসে মূলত সীমান্তে বাংলাভাষী নাগরিকদের হয়রানি, জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো এবং অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে।

অনুষ্ঠানে ওয়েইসি স্পষ্ট ভাষায় প্রশ্ন তোলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন এখনও ভারতে রয়েছেন? তিনি কি বাংলাদেশি নন? যদি অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতেই হয়, তাহলে তাকেই প্রথমে ফেরত পাঠানো হোক।”

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। অথচ বিজেপি সরকার একদিকে বাংলাভাষী দরিদ্র মানুষদের সীমান্তে নিয়ে জবরদস্তি ফেরত পাঠাচ্ছে, অন্যদিকে একজন ক্ষমতাচ্যুত বিদেশি নেত্রীকে দেশে রেখে দিয়েছে। ওয়েইসি প্রশ্ন তোলেন, এ ধরনের দ্বিচারিতা কেন?

ভারতের লোকসভার এই সদস্য বিজেপি সরকারের নীতিকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “দেশে এখন যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে যে কেউ বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ বা মুর্শিদাবাদ জেলার সাধারণ মানুষদেরও এই অভিযোগে গ্রেফতার করে বন্দিশালায় রাখা হচ্ছে। অথচ তাদের বাংলাদেশি কি না তা যাচাই করতেই অনীহা দেখা যাচ্ছে।”

ওয়েইসি অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র বাংলাভাষী শ্রমিকদের পুনে থেকে বিমানে তুলে এনে কলকাতায় নামানো হচ্ছে এবং সেখান থেকে সীমান্তে নিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যারা প্রকৃত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, তা যাচাই না করেই মানুষের সঙ্গে এভাবে আচরণ করা মানবাধিকার লঙ্ঘন।”

এ সময় তিনি আরও দাবি করেন, ভারতের উচিত বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া। তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশে জনপ্রিয় অভ্যুত্থান ঘটেছে, জনগণ নতুন সরকার গঠন করেছে। ভারতের উচিত সেই সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, ক্ষমতাচ্যুত নেত্রীকে আশ্রয় দিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি না করা।”

ওয়েইসির এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। একদিকে অনেকে তার বক্তব্যকে সাহসী এবং বাস্তবমুখী বলে মনে করছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। তবে এ নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনায় পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

No comments found