আওয়ামী আমলে ইসলামপন্থীদের দমনের ব্যর্থতা ও বামপন্থীদের লজ্জাজনক পরাজয়ের চিত্র তুলে ধরে ড. মির্জা গালিব বলেন, গণতান্ত্রিক স্পেইস সংকুচিত করে কেউ টিকে থাকতে পারে না।
ড. মির্জা গালিবের বিস্ফোরক মন্তব্য: “হাসিনার পালানোই বামপন্থীদের লজ্জাজনক রাজনৈতিক পরাজয়ের প্রতীক”
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব এক চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও রাজনৈতিক বাস্তবতা স্বীকার না করে বামপন্থীরা নিজেদের চরম রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে।
তিনি বুধবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি দীর্ঘ পোস্টে এই মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, "গত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসনে ইসলামপন্থি রাজনীতিকে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গি তকমা দিয়ে দমন করতে চেয়েছে সরকার। অথচ, এই ভয়ঙ্কর দমন-পীড়ন সত্ত্বেও ইসলামপন্থি রাজনীতি থেমে থাকেনি।"
তিনি আরও বলেন, এই দমন-পীড়নের বৈধতা দিয়েছে বামপন্থী ও সেক্যুলার মহল। অনেকেই বিচার বিবেচনা না করেই ‘ইসলামোফোবিয়া’ থেকে প্ররোচিত হয়ে এই দমননীতি সমর্থন করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই পথ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন গণতান্ত্রিক স্পেইস সংকুচিত করেছে, কিন্তু ইসলামপন্থীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে পারেনি।
ড. গালিবের মতে, “গণতান্ত্রিক আলাপ-আলোচনার যে ক্ষেত্র তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তা ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে সমাজে যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে উঠার সুযোগ ছিল, তাও নষ্ট হয়েছে। বরং যখন এই দমনমূলক শাসনের পতন ঘটে, তখন দেখা যায় ইসলামপন্থিরা খুব কম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যা তাদের পরিপক্ক রাজনৈতিক অবস্থানকেই ইঙ্গিত করে।”
তিনি কড়া ভাষায় বামদের সমালোচনা করে লেখেন, “এই জুলাই পরবর্তী সময়ে বামপন্থীরা আবারও একই ভুল করছে। হাসিনার পালানোর মধ্য দিয়ে তাদের নিজেদের যে লজ্জাজনক রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে, তা স্বীকার না করে তারা এখনো ডিনায়াল ও প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির ভেতরেই ঘুরপাক খাচ্ছে। ১৬ বছর ধরে যা ব্যর্থ, তা ধরে রাখার মানে নিজের ব্যর্থতা না মানা।”
তিনি ইসলামপন্থীদের উদ্দেশে বলেন, “সমাজের কট্টর ইসলামোফোব বামদের বাদ দিয়ে বাকি সবার সঙ্গে সম্মানজনক আলাপ-আলোচনার দরজা খোলা রাখা উচিত। ইসলামপন্থি রাজনীতির পজিশন সিভিল লিবার্টি এবং মানবাধিকারের আলোকে সমাজে খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার।”
সবশেষে ড. মির্জা গালিব বলেন, “পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও আলাপ ছাড়া কোনো জাতি সামনে এগোতে পারে না। গণতান্ত্রিক স্পেইস এবং মৌলিক মানবাধিকার সবার জন্যই দরকার, ইসলামপন্থী হোক বা সেক্যুলার—উভয়েরই দীর্ঘমেয়াদে লাভ হবে।”
এই বক্তব্য ঘিরে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ একে সাহসী বাস্তবতা বলছেন, কেউ বা নতুন রাজনৈতিক সম্ভাবনার ইঙ্গিত।