close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

হারিয়ে গেছে বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক বিয়ের পালকি

শাহাজাদ ইসলাম avatar   
শাহাজাদ ইসলাম
কালের বিবর্তন আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে বাংলার শেকড় ছোঁয়া ঐতিহ্য।..

একসময় বাঙালির বিয়ে মানেই ছিল পালকির রঙিন ছোঁয়া। কনে চড়ে যেত স্বপ্নের পালকিতে, আর গ্রামজুড়ে শোনা যেত "পালকি চলে! পালকি চলে! গগন তলে আগুন জ্বলে!" সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের সেই অমর কবিতার মতোই। কিন্তু এখন সেই পালকির আর খোঁজ নেই ঠাকুরগাঁওয়ের পল্লী গ্রামগুলোতেও।

 

এক সময় ঠাকুরগাঁওসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পালকি ছিল বিয়ের অনিবার্য অংশ। পালকি ছাড়া কনের বাড়ি থেকে বরের বাড়ি যাওয়ার কথা কল্পনাও করা যেত না। এখন আধুনিকতার দাপটে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস আর শোভাযাত্রায় সাজানো গাড়িই দখল করে নিয়েছে সেই স্থান।

 

স্থানীয় প্রবীণরা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামীণ জনপদে আগের মতো পালকির ব্যবহার আর দেখা যায় না। এমনকি নতুন প্রজন্ম জানেই না পালকি কেমন ছিল। আগে গ্রামের কারিগররা বাঁশ, কাঠ আর রঙিন কাপড় দিয়ে নানান রকমের পালকি তৈরি করতেন। পালকির ভেতর বসে কনের মুখে যে লাজুক হাসি থাকত, তা ছিল বিয়ের সৌন্দর্যের প্রতীক।

 

ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীণ সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষকরা মনে করেন, পালকি হারিয়ে যাওয়ার পেছনে যেমন রয়েছে প্রযুক্তির অগ্রগতি, তেমনি রয়েছে ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের উদাসীনতাও।  

তবে নতুন প্রজন্ম যেন বাংলার ঐতিহ্য জানতে পারে সে জন্য ঠাকুরগাঁও লোকায়ন জীবন বিচিত্র যাদুঘর সহ বিভিন্ন স্থানে সংরক্ষিত আছে।

অন্যদিকে গ্রামের প্রবীণরা কেউ কেউ এখনও চান, ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হোক অন্তত বিশেষ আয়োজনে প্রতীকীভাবে হলেও যেন বিয়ের পালকির ব্যবহার থাকে।

বাঙালির সংস্কৃতি শুধু পাটির, মাটির আর গানেই নয় পালকির মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতীকও তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।

 

শাহাজাদ ইসলাম ঠাকুরগাঁও 

Nessun commento trovato