বাংলাদেশের মাঠ ব্যবহারে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ তুলেছেন হংকং কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড। হামজা চৌধুরীকে নিয়েও করলেন বেফাঁস মন্তব্য—‘সে আমার দলে থাকলে বেঞ্চে বসত।’ ম্যাচের আগেই দুই দলের মধ্যে ছড়াল উত্তেজনা।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও হংকং। ম্যাচ শুরুর আগেই রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন হংকং কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড। ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠের অবস্থা ও বাংলাদেশ দলের অনুশীলন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
ওয়েস্টউডের অভিযোগ, এএফসির নিয়ম ভেঙে প্রতিদিন মাঠে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল, যা খেলার মান নষ্ট করতে পারে। কোচ বলেন, “আমি মনে করি মাঠের মান আরও ভালো হতে পারত। বাংলাদেশ প্রতিদিন মাঠ ব্যবহার করেছে, যা স্পষ্টতই নিয়মবিরুদ্ধ। এএফসি ম্যাচের আগে দুই-তিন দিন মাঠ বন্ধ রাখার নিয়ম আছে, কিন্তু তারা সেটা মানেনি। এর ফলে পিচের মান খারাপ হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অবশ্য বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। দুই দলকেই একই মাঠে খেলতে হবে। বাংলাদেশ কিছুটা বেশি অভ্যস্ত হতে পারে, কারণ তারা নয় দিন ধরে এখানে প্র্যাকটিস করেছে। তবে আমরা যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেটাতেই মনোযোগ দিচ্ছি।”
তবে ক্ষোভের মাঝেও বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন এই ব্রিটিশ কোচ। তিনি জানিয়েছেন, “এখানে এসে দারুণ লাগছে। হোটেল, বিমানবন্দর—সব জায়গায় সবাই খুব ভালো ব্যবহার করছে। আমি আগেও ভারতের বিভিন্ন শহরে কাজ করেছি—বেঙ্গালুরু, মুম্বাই, কলকাতা—তবে বাংলাদেশে আতিথেয়তা সত্যিই অসাধারণ। আমরা দেশটিকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানাই।”
তবে তার প্রশংসার আড়ালেই লুকিয়ে ছিল এক বিতর্কিত মন্তব্য। বাংলাদেশের তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে নিয়ে কটাক্ষ করে ওয়েস্টউড বলেন, “হামজা যদি আমার দলে খেলত, তবে তার জায়গা হতো বেঞ্চে।” বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৩৮ ধাপ এগিয়ে হংকং দল। তবে ওয়েস্টউড র্যাংকিংকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তার মতে, “আমি র্যাংকিং দেখি না। বাংলাদেশ ১৮ মাস আগে ভিন্ন অবস্থানে ছিল, এখন তারা অনেক স্থিতিশীল দল। আমরা লিখটেনস্টেইনের কাছেও হেরেছি, যারা ইউরোপের দল। র্যাংকিং নয়, আমি প্রতিপক্ষের মান, খেলোয়াড়, পরিবেশ—সব দিক বিবেচনা করে খেলি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ফুটবল শুধুমাত্র মাঠের খেলা নয়, এর সঙ্গে যুক্ত থাকে দর্শক, আবহাওয়া, স্টেডিয়ামের অবস্থা, এমনকি ভ্রমণ ও খাবারও। এসবই পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে। আমরা সবদিক থেকেই নিজেদের প্রস্তুত রেখেছি।”
বাংলাদেশ ও হংকংয়ের এই লড়াই শুধু মাঠে নয়, এখন যেন মানসিক লড়াইয়েও রূপ নিচ্ছে। ওয়েস্টউডের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সমর্থকরা। অন্যদিকে, হামজাকে ঘিরে এই বিতর্ক ম্যাচে নতুন উত্তেজনা যোগ করেছে।
এখন দেখার বিষয়—মাঠের পারফরম্যান্সে কে প্রমাণ করতে পারেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব—বাংলাদেশের ‘বেঞ্চে বসার যোগ্য’ বলা হামজা, নাকি কথার লড়াই শুরু করা ওয়েস্টউড!