বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, গুলশান চাঁদাবাজির ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা জড়িত কিনা তা পরিষ্কারভাবে জনগণের সামনে আনা জরুরি। তিনি স্বচ্ছ ও বিস্তারিত তদন্তের আহ্বান জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাজধানীর গুলশানে সংঘটিত চাঁদাবাজির ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা জড়িত কিনা, তা স্পষ্টভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গুলশানকাণ্ডে উপদেষ্টাদের কারো সম্পৃক্ততা থাকলে তা লুকিয়ে রাখা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। যদি এই ঘটনার তদন্তে গাফিলতি করা হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি হবে।” তিনি যোগ করেন, “স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হলে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকা উচিত। তার মতে, “যেসব দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে বা বয়কটের পথে যাবে, তারা শেষ পর্যন্ত জাতীয় রাজনীতির মূলধারা থেকে বাদ পড়বে।”
প্রসঙ্গত, গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু। গ্রেফতারের পর সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেন, ঘটনার আগে গুলশানের একটি হোটেলের সামনে ভোররাতে এক উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ও আলোচনা হয়েছিল।
ঘটনার এই নতুন মোড় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিযোগের সত্যতা নিরূপণ করতে হলে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত ছাড়া কোনো পথ নেই। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ বলছে, মামলার সব দিক যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে, যাতে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে কারও প্রশ্ন না থাকে।
এ বিষয়ে জনমনে যে সন্দেহ ও কৌতূহল তৈরি হয়েছে, তা নিরসন করতে সালাহউদ্দিন আহমদ আবারও জোর দিয়ে বলেন, “আমরা চাই, দেশের মানুষ সত্য জানুক। যদি কেউ অপরাধে জড়িত থাকে, সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।”
রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুধু গুলশান চাঁদাবাজি মামলার রহস্যই উন্মোচন করবে না, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়েও পরিষ্কার ধারণা দেবে। এখন নজর সবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ ও সরকারের অবস্থানের দিকে।