গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর পৈশাচিক হামলা: মবতন্ত্রের ছত্রছায়ায় দেশ গভীর সংকটে — গণসংহতির তীব্র প্রতিবাদ
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষের ঘরবাড়িতে দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংঘটিত এই ভয়াবহ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক যৌথ প্রেস বিবৃতিতে তারা বলেন, এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় — এটি একটি সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মবতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উগ্রতা ছড়ানো হচ্ছে এবং এর ফলে দেশ এক গভীর সংকটে পড়েছে।
নেতারা বলেন, গঙ্গাচড়ায় মাইকিং করে হিন্দু পল্লীতে বারবার হামলা, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর শুধু ঘৃণ্য অপরাধই নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের ব্যর্থতারও দৃষ্টান্ত। তারা বলেন, এমন হামলা শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্যই নয়, গোটা জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
তারা প্রশ্ন তোলেন — যখন পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত, তখন কেন ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়? কেন নাগরিকরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে?
বিবৃতিতে বলা হয়, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু এ ধরনের অভিযোগকে অজুহাত বানিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর এই বর্বরতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
গণসংহতির দুই শীর্ষ নেতা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পরও যদি রাষ্ট্র এই ধরনের সহিংসতা থামাতে না পারে, তাহলে তা প্রমাণ করে যে প্রশাসন এখনো গণতন্ত্রের বিপরীতে গিয়ে মবতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করছে।
তারা অবিলম্বে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত, দোষীদের শনাক্ত ও বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। একই সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কাউকে গঙ্গাচড়া এলাকায় পাঠিয়ে জনমনে নিরাপত্তা ও আস্থার বার্তা দিতে আহ্বান জানানো হয়।