গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাত আসামিকে আদালত দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে হত্যার সরাসরি প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাত আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। শনিবার (৯ আগস্ট) গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর আল মামুনের আদালতে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং পুলিশি হেফাজতে নিতে নির্দেশ দেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তুহিন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি আটজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকি একজন পলাতক রয়েছেন।
কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেন, হানিট্র্যাপ চক্রের সদস্যদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—প্রধান আসামি কেটু মিজান (যার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে), কেটু মিজানের স্ত্রী পারুল আক্তার ওরফে গোলাপি (হানিট্র্যাপ কার্যক্রমে জড়িত), আল আমিন (২টি মামলা), স্বাধীন (২টি মামলা), শাহজালাল (৮টি মামলা), ফয়সাল হাসান, সাব্বির (২টি মামলা) এবং সর্বশেষ গ্রেফতার শহিদুল।
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, আসামিদের কাছ থেকে হত্যার অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজসহ অধিকাংশ প্রমাণ পুলিশের হাতে রয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দাখিল করা হবে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ভিডিওগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি গাজীপুরের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে, যা অনেককে অপরাধে জড়িয়ে ফেলছে। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্যও গাজীপুরে নানা অপকর্ম চলছে। ফোর্সের ঘাটতির কারণে শতভাগ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই হত্যাকাণ্ড গাজীপুরের সাংবাদিক সমাজসহ দেশের গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা দ্রুত বিচার এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।