গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বন্দর প্রেসক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা দ্রুত বিচার, সুষ্ঠু তদন্ত এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে বন্দর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন স্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি।
বন্দর প্রেসক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদ। সমাবেশে প্রধান বক্তারা ছিলেন প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা কবির হোসেন, বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ পনেছ, সহ-সাধারণ সম্পাদক সবুজ মাহমুদ, অর্থ সম্পাদক লতিফ রানা, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মোঃ নাসিরউদ্দিন, সাবেক সহ-সভাপতি নূরুজ্জামান মোল্লা, সাংবাদিক এস এম শাহীন, আবুল বাশার, অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন এবং মোঃ সোহেল মিয়া।
এছাড়াও প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা জিএম মাসুদ, সহ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহজামাল, তথ্য প্রচার ও গবেষণা সম্পাদক ইকবাল হোসেন, কাজী সাঈদসহ স্থানীয় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিক তুহিনের হত্যাকাণ্ড শুধু একজন সাংবাদিকের মৃত্যু নয়, বরং এটি সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর একটি বড় আঘাত। তারা জোর দিয়ে বলেন, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, দেশে সাংবাদিকদের উপর মিথ্যা মামলা, হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ সুরক্ষিত করতে হবে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক সাংবাদিক বলেন, সাংবাদিক তুহিনের হত্যাকারীরা যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত না করলে এ ধরনের অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। তারা এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আয়োজিত এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। পথচারী ও সাধারণ মানুষও এই কর্মসূচিতে এসে সংহতি প্রকাশ করেন। সাংবাদিক তুহিনের পরিবার এবং সহকর্মীরা আশা প্রকাশ করেন, এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার হলে দেশের অন্যান্য সাংবাদিকও ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা ফিরে পাবেন।
সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাংবাদিকরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করেন, আর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই তুহিন হত্যার বিচার যেন বিলম্বিত না হয়, সে দাবি জোরালোভাবে পুনর্ব্যক্ত করা হয় এই সমাবেশে।