ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হায়দারাবাদ এলাকার স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ী কাইয়ুমের গুদামে প্রথম আগুন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পাশের ব্যবসায়ী মিজান ও আব্দুল আজিজের গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য স্থানীয়রা প্রথমে উদ্যোগ নিলেও আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তারা ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি এবং জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট মিলে মোট পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, “আমরা সর্বপ্রথম চেষ্টা করেছি আগুন যাতে পাশের বাসাবাড়ি ও অন্য গুদামে ছড়িয়ে না পড়ে। গুদামের ভেতরে বিপুল পরিমাণ ফেব্রিকসসহ দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।” তিনি আরও জানান, আগুনের সূত্রপাতের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে জানা যাবে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুনে কোটি টাকারও বেশি মালপত্র পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এক রাতেই সব হারিয়ে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকাজুড়ে গুদামগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে গড়ে উঠেছে। অগ্নি-নিরাপত্তা বা জরুরি প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়াই এসব গুদামে বিপুল পরিমাণ ঝুট ও ফেব্রিকস জমা রাখা হয়। তারা দাবি জানিয়ে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি জোরদার করতে হবে, নইলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমাদের সব পুঁজি ছিল গুদামে। এক রাতেই সব শেষ হয়ে গেল। এখন কিভাবে আবার ব্যবসা শুরু করব বুঝতে পারছি না।”
গাজীপুরের এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আবারও দেখিয়ে দিল দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা দুর্বল। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ঝুট গুদামগুলোর কারণে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি ভয়াবহ।