close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

‘গাজীপুর স্টাইলে’ ৫ সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনা, ছাত্রলীগের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
A chilling plan to kill five journalists in Feni, similar to the Gazipur incident, has been exposed. WhatsApp chats reveal top local Chhatra League and Jubo League leaders’ involvement in the plot.

গাজীপুরের ঘটনার ধাঁচে ফেনীতে পাঁচ সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেছে। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে উঠে আসা এই ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের একাধিক শীর্ষ নেতার নাম প্রকাশিত হয়েছে।

ফেনীতে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যার ভয়াবহ পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ‘গাজীপুর স্টাইল’-এ হামলার এই পরিকল্পনা উঠে এসেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের একাধিক নেতার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চ্যাট থেকে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই পরিকল্পনা শুধু শারীরিক আক্রমণেই সীমাবদ্ধ ছিল না—বরং লক্ষ্যবস্তু সাংবাদিকদের বাসায় আগুন লাগানোর মতো ভয়ঙ্কর নাশকতাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ফেনী প্রতিনিধি ও দৈনিক ফেনীর সময়-এর সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ বিষয়টি আগে থেকেই গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জানত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ‘একতাই শক্তি’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। গ্রুপটিতে যুক্ত ছিলেন পৌর ও জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাসহ অন্তত ২০-২৫ জন সক্রিয় সদস্য। আলোচনায় ফেনীর পাঁচজন সাংবাদিককে সরাসরি টার্গেট করা হয়—মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, যমুনা টিভির আরিফুর রহমান, ফেনীর সময়-এর প্রধান প্রতিবেদক আরিফ আজম, এখন টিভির সোলায়মান হাজারী ডালিম, এবং এনটিভি অনলাইনের জাহিদুল আলম রাজন।

চ্যাটে দেখা যায়, সাইফ উদ্দিন নামের এক সদস্য লেখেন—আমাদের উচিত গাজীপুরের মতো মিডিয়ার ট্রায়ালের সুযোগ নেওয়া। এই সুযোগে শাহাদাত, আরিফ আজম, রাজন—এদের যে কারোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” এরপর সাহেদ অভি নামের আরেক সদস্য লিখেন—“এদের ছাড় নেই, মাটির নিচে থাকলেও তুলে আনব। এনটিভির রাজন, যমুনা টিভির আরিফ—সবাইকে দেখে নেব।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এই গ্রুপে ছিলেন—জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহাম্মদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নূর করিম জাবেদ, সহসভাপতি সাহেদ আকবর অভি, পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত তুষার, কলেজ ছাত্রলীগের সাইফ উদ্দিন মানিকসহ বহু নেতা-কর্মী। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে হত্যা, সন্ত্রাস ও নাশকতার একাধিক মামলায় পলাতক।

এ ঘটনায় ফেনীর সাংবাদিক সমাজে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফেনীর প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম আবদুর রহীম বলেন, “এ ধরনের ঘটনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি। অপরাধীরা যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনী জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন বলেন, “ফেনীর গণহত্যায় জড়িতরা পলাতক থেকে নতুন করে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার এই পরিকল্পনা ভয়াবহ ও অগ্রহণযোগ্য।”

সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, “গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সাংবাদিকরা যদি ভয় ও হুমকির মধ্যে কাজ করে, তবে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে। অপরাধীর পরিচয় যা-ই হোক, তাকে অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।”

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামছুজ্জামান জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যদের শনাক্ত করে সাইবার সেলের সহায়তায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।

Nenhum comentário encontrado