মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার গাজায় বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানালেও, পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
অবরুদ্ধ গাজায় শুধু বোমাবর্ষণই নয়, খাদ্য সংকট ও অনাহারও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ এক তরুণী অনাহারে মারা গেছেন। এর মধ্য দিয়ে অনাহার ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪০ জনে, যার মধ্যে ১০৭টি শিশু রয়েছে।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করেছে যে, দীর্ঘদিন ধরে অবরোধ ও সীমিত মানবিক সহায়তা গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী নিয়মিতভাবেই মানবিক সাহায্য সংগ্রহে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের হামলায় ১৭ জন নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত মানবিক সাহায্য নিতে যাওয়া অন্তত ১ হাজার ৮৯৮ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছেন আরও ১৪ হাজার ১১৩ জন। আন্তর্জাতিক মহলে এই প্রবণতাকে স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় চলমান সহিংসতাকে "মানবিক বিপর্যয়" হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তবে বৈশ্বিক কূটনৈতিক চাপ সত্ত্বেও, ইসরায়েলি হামলা থেমে নেই।
অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করছেন, হামলার পাশাপাশি খাদ্য ও ওষুধ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গাজাবাসীদের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা কার্যত সমগ্র অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকট তৈরি করবে।
প্রাণহানির সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় গাজায় জীবনযাত্রা চরম সংকটে পড়েছে। একদিকে হামলা, অন্যদিকে অনাহার—সব মিলিয়ে এই অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয়ের গভীরতা প্রতিদিনই নতুন করে সামনে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারায় প্রশ্ন উঠছে—গাজাবাসীর এই দুর্দশার অবসান আদৌ ঘটবে কি না?