close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৭২, আহত শতাধিক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা হামলায় অন্তত আরও ৭২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩১৪ জন। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন এলাকায় এ হামলা চালায় ইসরায়েল..

শুক্রবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহত ও আহতদের মধ্যে কেবল তাদেরই হিসাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং সড়কে পড়ে থাকা বহু মৃতদেহ পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় এবং ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার গোলাবর্ষণের কারণে উদ্ধার করা যায়নি । ফলে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন। আইডিএফ বলছে, তারা হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তবে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বেসামরিক মানুষই এসব হামলার প্রধান শিকার।

ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সামরিক হামলার পাশাপাশি খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করে দিয়েছে ইসরায়েল, যার ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপুষ্টি ও অনাহারে এখন পর্যন্ত ২০১ জন মারা গেছেন, এদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (OCHA) জানিয়েছে, গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের অধিকাংশই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে হাসপাতালগুলোতে অবস্থা নাজুক, এবং বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে অনেক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজার চলমান সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মহল বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তা কার্যকর হয়নি। তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলছে, তবে ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষই নিজেদের শর্তে অটল রয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, গাজায় লাগাতার বিমান হামলা এবং খাদ্য-চিকিৎসা অবরোধ আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের সামিল, এবং এর জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।

ক্রমবর্ধমান হতাহতের সংখ্যা ও মানবিক বিপর্যয় গাজা উপত্যকাকে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ সংকটে ঠেলে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্র: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আনাদোলু এজেন্সি, জাতিসংঘ

Ingen kommentarer fundet