যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না। তথ্য গোপন ও যুদ্ধাপরাধ আড়াল করতেই এই বাধা, এমন অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল এখনও বিদেশি সাংবাদিকদের গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। এই বাধার কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জন্য গাজায় সরাসরি সংবাদ সংগ্রহ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে, যুদ্ধের প্রকৃত তথ্য গোপন ও যুদ্ধাপরাধ আড়াল করতেই বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার জেরুজালেমের সর্বোচ্চ আদালতে বিদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ)-এর দায়ের করা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি সাংবাদিকদের গাজা উপত্যকায় অবাধে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। তবে আদালত ইসরায়েলি সরকারকে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আরও ৩০ দিন সময় দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশে বাধা দেওয়া স্পষ্টতই তথ্য গোপন ও যুদ্ধাপরাধ আড়াল করার প্রচেষ্টা।
এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে এফপিএ জানিয়েছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছে যাতে সাংবাদিকদের প্রবেশ যতটা সম্ভব বিলম্বিত হয়। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের শুরুর পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। সাংবাদিকরা কেবল সীমিত সময়ের জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে নির্দিষ্ট এলাকায় গাজা সফর করতে পেরেছেন।
এদিকে, চরম প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই এখন গাজার ভেতর থেকে খবর পৌঁছে দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এত সংখ্যক সাংবাদিক নিহতের ঘটনা ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৬৮,২০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭০,৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। দখলকৃত পশ্চিম তীরেও একই সময়ে সহিংসতা বেড়েছে। সেখানে অন্তত এক হাজার ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০ হাজার ৩০০ জন আহত হয়েছে।



















