বাংলাদেশের রাজউক ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ বিধিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাট ও প্লটের কোটা বাতিল করা হয়েছে। গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈষম্যমূলক এই কোটাব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। একই পরিবারের একাধিক বরাদ্দের সুযোগও বন্ধ করা হয়েছে।
গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় জানায়, শেরেবাংলা নগরের ১৭.৪৭ একর জমিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে। শাহবাগসহ ৯টি জেলায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শেষ হয়েছে এবং আরও ৫৫ জেলায় নির্মাণাধীন। মিরপুরে জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের জন্য ২,৩৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আজিমপুরে নিম্ন আয়ের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৮৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বার্থবিরোধী পাঁচটি প্রকল্প বাতিল করে সরকারের ৪২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। বিশেষ অডিটে ২০০৯-২৪ সময়কালে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ২৮২টি অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ১১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পে জড়িত ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তকে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কর্মী নিয়োগ, নীতিমালা হালনাগাদ এবং দীর্ঘদিনের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ ধরনের পরিবর্তনগুলি দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে এবং অনিয়ম কমবে। তবে কোটা বাতিলের ফলে কিছু পেশাজীবী শ্রেণি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারে।
গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ সরকারি আবাসন প্রকল্পগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং সাধারণ জনগণের জন্য আরও অধিক সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই পরিবর্তনগুলি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত প্রকাশ করেছেন।