কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী সতর্ক করেছেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পরিণতি শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়াবহ হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সন্তান আব্দুল কাদের সিদ্দিকী আবারও সরব হয়েছেন দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি স্পষ্ট সতর্ক করে বলেন, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না হয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিণতি হবে শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়াবহ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ঐতিহাসিক মাকড়াই দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, “জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যদি আপনারা অন্যায় করতে যান, আমি কাদের সিদ্দিকী বেঁচে থাকতে সেটা হতে দেব না। আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন, শাস্তি দিন, আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু অন্যায় করলে আমিই আপনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা এক নয়, তবে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জয়বাংলাও থাকবে।”
তিনি সরাসরি ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস, আমি আপনাকে সবসময় সম্মান করতাম। আপনি বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙা দেখেছেন, আবার দেখেছেন আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সব সরকার ও অসংখ্য মানুষ একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী না থাকলে আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের অর্ধেক ইতিমধ্যেই মাটির নিচে চলে যেত। আপনার এক বছরের শাসন আমি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দেন এবং নির্বাচন করাতে ব্যর্থ হন, তবে শেখ হাসিনার চেয়ে আপনার পরিণতি ১০ গুণ ভয়াবহ হবে।”
এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেবেন না। তাদের সম্মান দিতে হবে। আমরা কোনো ভিক্ষা চাই না, আমরা সম্মান চাই। যুদ্ধ বড় কঠিন ব্যাপার। যখন আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন জীবনের মায়া ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের বর্তমান সম্মানী বাড়িয়ে অন্তত এক লাখ টাকা করতে হবে। তবে এ বছরই অন্তত ৫০ হাজার টাকা করার দাবি জানাই।”
কাদের সিদ্দিকীর এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন। একই সঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজনৈতিক সমাধান না এলে আবারও বড় ধরনের আন্দোলনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনীতির সংকটময় মুহূর্তে তার এই সতর্কবার্তা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন সবার চোখ ফেব্রুয়ারির দিকে—সত্যিই কি নির্বাচন হবে, নাকি দেশের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতার ঝড় বয়ে যাবে?