পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এনসিপির কথায় কিছু যায় আসে না—আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জোরালো বিতর্কের মাঝেই পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো গুজব কিংবা রাজনৈতিক বক্তব্যে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই—আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। উপদেষ্টা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এনসিপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাই চূড়ান্ত—ফেব্রুয়ারিতেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, "ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না—এটি কেবল কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্য। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।"
শুধু নির্বাচন নয়, বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুতেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। সম্প্রতি সিলেটে পাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তিনি কড়া সমালোচনা করেন। তার মতে, এ ঘটনায় প্রশাসনের নীরবতা কিংবা যোগসাজস ছিল। এজন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং খুব দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে বহুল আলোচিত তিস্তা মহাপ্রকল্প। চীনের সহায়তায় নেওয়া এ প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হবে, যার মেয়াদ নির্ধারণ করা হচ্ছে ১০ বছর। নদীভাঙন রোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিদেশে বাংলাদেশি মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো লিখিত নির্দেশনার তথ্য নেই। এমনকি উপদেষ্টা পরিষদেও এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।"
এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা কেবল নির্বাচনের সময়সূচি স্পষ্ট করলেন না, বরং চলমান নানা গুজব ও বিতর্ককেও কার্যত একেবারে গুরুত্বহীন করে দিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার এই ঘোষণা নির্বাচনী প্রস্তুতি ও জনমনে একধরনের নিশ্চিত বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।
এখনো পর্যন্ত বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা বক্তব্য দিলেও সরকারপক্ষ থেকে বারবার ফেব্রুয়ারিকে ভোটের মাস হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। তাই রিজওয়ানা হাসানের এই বক্তব্য ভোটের মাঠে অনিশ্চয়তা কমিয়ে আনার ইঙ্গিত বহন করছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
ফলে বলা যায়, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফেব্রুয়ারিকেই চূড়ান্ত মাস হিসেবে ধরে এগোচ্ছে সরকার।