জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে কক্সবাজারে গোপন সফরে যাওয়া এনসিপির শীর্ষ পাঁচ নেতা হঠাৎ করেই ঢাকায় ফিরে এসেছেন। তাদের সফর ঘিরে চলছে নানা জল্পনা।
৫ আগস্ট, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকীর দিন, রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়ে কক্সবাজারে ‘ভ্রমণে’ আসেন এনসিপির শীর্ষ পাঁচ নেতা। এই সফরের আনুষ্ঠানিক কারণ ‘বিনোদন’ বলা হলেও, পুরো যাত্রাটি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জন ও সন্দেহ। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার পর তারা ঢাকায় ফেরেন বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।
কক্সবাজার এনসিপির অন্যতম সংগঠক খালিদ বিন ওয়ালিদ জানান, ওই রাতে চার শীর্ষ নেতা সড়কপথে কক্সবাজার ত্যাগ করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে সস্ত্রীক কক্সবাজার ছাড়েন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজের ব্যবস্থাপক ইয়াকুব আলী বলেন, রাত সাড়ে ১২টার কিছু পরেই দুটি গাড়িতে করে তারা হোটেল ত্যাগ করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর পর্যন্ত তারা হোটেলের কক্ষ বুকিং রেখেছিলেন। সকালে দুইজন সস্ত্রীক ঘুরতে বের হলেও, তারা আর হোটেলে ফেরেননি। অন্যরা হোটেলে অবস্থান করলেও রাতে সবাই একসঙ্গে চলে যান।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনেকটা গোপনীয়ভাবে কক্সবাজার পৌঁছান এনসিপির শীর্ষ পাঁচ নেতা— হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, তাসনিম জারা, নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী ও খালিদ সাইফুল্লাহ। এ সময় সারজিস আলমের স্ত্রী আয়শা খানমও সঙ্গে ছিলেন।
তাদের আগমনের পরপরই উখিয়ার ইনানী সী পার্ল হোটেলে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ‘গোপন বৈঠক’ হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। যদিও হোটেলের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেন, ওই সময় সেখানে কোনো বিদেশি নাগরিক অবস্থান করছিলেন না। এ নিয়ে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারীও গণমাধ্যমকে বলেন, তারা শুধুমাত্র ঘুরতে এসেছেন, কোনো বৈঠক করেননি।
পরদিন বুধবার দুপুরে হঠাৎ হোটেল পরিবর্তন করে তারা কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টসংলগ্ন হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজে ওঠেন। এর মধ্যেই দলীয় যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে কক্সবাজার ভ্রমণ করার জন্য ওই পাঁচ নেতার কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে— কেন এত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দিনে তারা হঠাৎ করে ঢাকার বাইরে গেলেন, কেন এই সফর ছিল এতটা গোপন, এবং বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের গুজব কতটা সত্য। যদিও এনসিপির পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে, তবুও এই সফর নিয়ে কৌতূহল থামছে না।