খেলাফত মজলিস এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তিন দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেছে, সম্মানজনক বেতন ও ভাতা নিশ্চিত না করলে শিক্ষা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দলটি সরকারের প্রতি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে দলের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, শিক্ষকরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতা। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষকই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলেও তারা যে পরিমাণ ভাতা পান, তা কোনোভাবেই সম্মানজনক নয় এবং তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্যও যথেষ্ট নয়।
নেতৃদ্বয় বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানো হয়নি, যা তাদের জীবন-জীবিকার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের মানস গঠনের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে টেকসই ও মানসম্মত করতে হলে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ও ভাতা বৃদ্ধির তিন দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। খেলাফত মজলিস মনে করে, শিক্ষকদের এই ন্যায্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা শুধু তাদের অধিকার নয়, বরং শিক্ষার মানোন্নয়নেরও পূর্বশর্ত।
দলটি আরও উল্লেখ করে, যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এখনো এমপিওভুক্ত হতে পারেননি, তাদের অবস্থা আরও করুণ। তারা সীমাহীন কষ্টের মধ্যেও জাতি গঠনের গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। এই শিক্ষকদেরকেও এমপিও তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
খেলাফত মজলিসের নেতারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিক্ষকদের সম্মানজনক বেতন-ভাতা নির্ধারণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ন্যায্য দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত থাকলে তা শিক্ষা অঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
এদিকে সোমবার খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদকসহ একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা শিক্ষক সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষকরা শুধু বেতন বাড়ানোর আন্দোলন করছেন না, তারা আসলে শিক্ষা ব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষার লড়াই করছেন।”
খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শিক্ষকদের সকল ন্যায্য দাবি ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানায় এবং আশা করে, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এ সংকটের সমাধান করবে।