এলন মাস্ক কি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হতে চলেছেন?..

Abdulmalek avatar   
Abdulmalek
ভবিষ্যতে তিনি কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্ক কেবল ব্যবসায়ী নন, এখন তিনি রাজনীতির মঞ্চেও শক্তিশালী ভূমিকা রাখছেন। টেসলা, স্পেসএক্স ও টুইটারের মালিক মাস্ক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্ক ক্রমেই এমন এক ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছেন, যা তাকে শুধু মার্কিন রাজনীতিতেই নয়, বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সাহায্য করছে।

মাস্কের রাজনৈতিক রূপান্তর শুরু হয় তার ব্যক্তিগত জীবনের পরিবর্তনের মাধ্যমে। বিশেষ করে, তার সন্তান ভিভিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর তিনি "woke mind virus" ধারণায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং ডানপন্থী রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হন। এই পরিবর্তন তাকে সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকের ভূমিকায় নিয়ে আসে।

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাস্ক ট্রাম্পকে জয়ী করতে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি দান করেছেন, যা তাকে নির্বাচনের অন্যতম প্রধান অর্থায়নকারী করেছে। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মাস্ককে "সরকারি দক্ষতা বিভাগের" প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন, যার মাধ্যমে তিনি সরকারি ব্যয়ের ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারবেন।

মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ কিছু দেশের জিডিপির চেয়েও বেশি। তার সম্পদ বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বার্ষিক আয়ের চেয়েও বেশি। ট্রাম্প প্রশাসনে তার অন্তর্ভুক্তির পর মাত্র দুই মাসে তার সম্পদ ৭৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মধ্যে টেসলা, স্পেসএক্স ও স্টারলিংক এমন প্রযুক্তিগত শক্তি ধারণ করে যা সরাসরি সামরিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ব্যবহৃত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তিগুলো ভবিষ্যতে তাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্ক ভবিষ্যতে ভারতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। জর্জ সোরোস ভারতের রাজনীতিতে যেভাবে বিতর্কিত প্রভাব ফেলেছিলেন, মাস্ক তার চেয়ে ৫০ গুণ বেশি সম্পদের মালিক। তার স্টারলিংক প্রযুক্তি ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর টেলিযোগাযোগ খাতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ ছাড়া, ভারতের বাজারে টেসলা প্রবেশের বিষয়টিও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

যদিও ট্রাম্প এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তবে মাস্কের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষমতা তাকে ট্রাম্পের চেয়েও বেশি প্রভাবশালী করে তুলেছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। মাস্ক বর্তমানে এমন এক ক্ষমতার অবস্থানে রয়েছেন, যেখানে তিনি সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে পারেন।

এলন মাস্কের প্রভাব কেবল প্রযুক্তি ও ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তিনি এখন সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রেও প্রবেশ করেছেন। তার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক ভূমিকা ও আর্থিক সামর্থ্য তাকে বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত করছে। ভবিষ্যতে তিনি কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন।

Aucun commentaire trouvé