ভৈরবে এক গৃহবধূর ঘরে একসঙ্গে তিন যমজ ছেলের জন্ম—ঘরে আগে ছিল আরও তিন সন্তান। দিনমজুর স্বামীর দুশ্চিন্তা এখন ছেলেমেয়ের দুধ ও খরচ চালানো নিয়ে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় এক অভাবগ্রস্ত পরিবারে ঘটেছে বিরল এক ঘটনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বোড়ালনগর গ্রামের হাছেনা বেগম (৩২) একসঙ্গে তিনটি ছেলেসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ভৈরব শহরের হলিটার্চ মেডিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড হসপিটালে ২৯ জুন দিবাগত রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই তিন নবজাতকের জন্ম হয়।
হাছেনা বেগমের স্বামী ওয়ালিউল্লাহ মিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। কৃষিকাজ করেই কোনোরকমে চলে তাদের সংসার। তাদের ঘরে আগে থেকেই রয়েছে তিনটি পুত্রসন্তান। এখন নতুন তিন নবজাতকের আগমনে সন্তান সংখ্যা দাঁড়ালো ছয়জনে।
যদিও এই ঘটনাকে তিনি আল্লাহর রহমত হিসেবে দেখছেন, তবে একইসঙ্গে ভরণপোষণ নিয়ে তার দুশ্চিন্তার অন্ত নেই।
ওয়ালিউল্লাহ বলেন,একসঙ্গে তিন ছেলে পেয়ে আমরা আনন্দিত। কিন্তু আমি নিজেই দিনমজুর। আগেও তিনটি সন্তান ছিল, এখন ছয়জন। কীভাবে দুধ, ওষুধ আর খরচ সামলাব, ভেবে পাচ্ছি না।
হাছেনা বেগমের শাশুড়ি বলেন,আল্লাহর অশেষ রহমত আমাদের ঘরে। আমার বউমা একসঙ্গে তিনটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিয়েছে। আমরা চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. সফিকুল ইসলাম জানান,মা ও তিন নবজাতক বর্তমানে সুস্থ আছেন। অস্ত্রোপচারের পর থেকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে তারা পর্যবেক্ষণে আছেন।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুল আলম বলেন, ওয়ালিউল্লাহর পরিবার অসচ্ছল। হাসপাতালের পক্ষ থেকে আমরা যতটা সম্ভব তাদের সহায়তা করছি। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই আমরা পাশে থাকার চেষ্টা করছি।
এই অসহায় পরিবারের এমন একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্মের ঘটনা ইতোমধ্যে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই পরিবারটিকে সাহায্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত সন্তান একসঙ্গে লালনপালন একটি চ্যালেঞ্জ। সঠিক পুষ্টি, চিকিৎসা ও যত্ন না পেলে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়তে পারে। তাই শুধু এককালীন নয়, পরিবারটির পাশে থাকতে হবে দীর্ঘমেয়াদে।