close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

এক সংগ্রামী মায়ের গল্প

M.A Hossain avatar   
M.A Hossain
****

দিল আফরোজ বেগম (৮৫)। এক সংগ্রামী মা। অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হলেও সবকিছু ছাপিয়ে তার বড় পরিচয় তিনি একজন সফল মা । তিনি রত্নগর্ভা। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত ৯ সন্তানের জননী নিজে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষিত না হলেও প্রতিটি সন্তানকে শিক্ষার পরিপূর্ণ আলোয় আলোকিত করে তুলেছেন। যারা আজ স্ব স্ব ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। তার ২ সন্তান ছোটকালে মারা যায়। অন্য ১০ সন্তানের ৯ ছেলেকে নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ বিসর্জন দিয়ে কাউকে চিকিৎসক, শিক্ষক, লেখক ও ব্যাংকার বানিয়েছেন।মহিয়সী এ নারীর প্রথম ছেলে মো. একরামুল হক। তিনি মীরসরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তিরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে কামিল ফিকহ বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। দ্বিতীয় ছেলে মো. রেজাউল হক নিজামী। তিনি মীরসরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী সুফিয়া নুরীয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১১ সালে শিক্ষকতায় বিশেষ অবদানের জন্য মীরসরাই এসোসিয়েশান চট্টগ্রাম কর্তৃক সংবর্ধিত হন। তৃতীয় ছেলে মো. এরফানুল হক নিজামী। তিনি চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক। তিনি একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, শায়খুল হাদীস ও ফকিহ। চতুর্থ ছেলে ডা. মজিবুল হক সিরাজী। তিনি পিজিটি মেডিসিন, নিউরো মেডিসিন ও কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ।

রত্নগর্ভা এই মায়ের পঞ্চম ছেলে মো. আজিজুল হক নিজামী। তিনি বর্তমানে হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ষষ্ঠ ছেলে মো. আবদুল হক সিরাজী। তিনি মীরসরাইয়ের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুফিয়া নুরীয়া ফাজিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মুফতী মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। সপ্তম ছেলে মো. ফরিদুল হক সিরাজী। তিনি সীতাকুন্ডে বগাচতর নূরিয়া গনিউল উলুম ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অষ্টম ছেলে মো. সাইফুল হক সিরাজী। তিনি মিরসরাই কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি একজন লেখক, গবেষক, তার লিখিত 'মীরসরাই-এর ভাষা সৈনিক' গ্রন্থটি ঢাকার একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়েছে। নবম ছেলে মো. আতাউল হক সিরাজী। তিনি দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির একটি শাখায় ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তার লেখা "হে ইমানদারগণ" এবং "মৃত্যু যে কথা কানে কানে বলে যায়" শীর্ষক দুইটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একমাত্র মেয়ে আয়েশা খাতুন। তিনি গৃহিনী। 

মীরসরাই উপজেলার ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়নের মধ্যম মঘাদিয়ার জমিদার শেখ চাঁন মিয়ার পুত্র মাওলানা শেখ খায়েজ আহমদের বড় কন্যা দিল আফরোজ বেগম। স্বামী শাহ সুফী মুফতী মাওলানা ছেরাজুল ইসলাম (র:) ছিলেন একজন শিক্ষক ও লেখক। মানুষ গড়ার কারিগর এই মা বর্তমানে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। সন্তানদের প্রেরণার বাতিঘর এই মা অসীম ধৈর্য্য ও আদর্শ লালন করে তাদের মানুষ করেছেন।

No comments found