close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এই দিন দিন না, আরও দিন আছে: আদালতে সোলায়মান সেলিম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
After being sent to jail in an attempted murder case involving a Jagannath University student, former MP Haji Selim's son Solaiman Selim ominously declared in court, “This day is nothing — more d..

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠানোর সময় আদালতে দাঁড়িয়ে সাবেক এমপি হাজী সেলিমের পুত্র সোলায়মান সেলিম বলে ওঠেন, "এই দিন দিন না, আরও দিন আছে।" আদালত চত্বরেই হুমকির ইঙ্গিত দেয় তার এ উক্তি।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় কারাগারে পাঠানো হলো ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বড় ছেলে সোলায়মান সেলিমকে। তবে শুধু আদালতের নির্দেশেই থেমে থাকেননি তিনি। বরং আদালত কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময়ই উত্তপ্ত মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন। সোলায়মান সেলিম বলে ওঠেন, "এই দিন দিন না, আরও দিন আছে। এই দিন নিয়ে যাবে, সেই দিনের কাছে।" — যা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত আইনজীবী, পুলিশ এবং সংবাদকর্মীদের কানে পৌঁছায় হুমকির মতো।

ঢাকার মহানগর হাকিম এম. মিজবাহ উর রহমান বৃহস্পতিবার (২৭ জুন ২০২৫) দুই দিনের রিমান্ড শেষে সোলায়মান সেলিম ও সাবেক ৩৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাসকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কোতোয়ালি থানার এসআই কে এম আবদুল হক তাদের আদালতে হাজির করেন। শুনানি শেষে বিচারক এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই তানভীর মোর্শেদ।

মূল মামলার পটভূমিতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মিছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক পেরিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে গেলে সেখানে হামলার শিকার হন আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাস গুরুতর আহত হন।

তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার চার মাস পর, ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর, আহত অনিক নিজে বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার অন্যতম আসামি হিসেবে গণআন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রায় তিন মাস পর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সোলায়মান সেলিমকে। এরপর থেকেই আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয় এবং রিমান্ড শেষে পাঠানো হয় কারাগারে।

রাজনৈতিক পরিচয়েও তিনি বেশ পরিচিত। তার পিতা হাজী সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন তিনি। সেই নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়েও নৌকার প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে পরাজিত করেন এবং সংসদে ১৬ জন স্বতন্ত্র এমপিকে নিয়ে গঠন করেন একটি জোট।

পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি আবারও সংসদ সদস্য হন। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজী সেলিম অংশ না নেওয়ায় আসনটি দখলে নেন তার বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম।

তবে এখন সেই ক্ষমতাধর সেলিম আদালতের কাঠগড়ায়। আর আদালত চত্বরেই তার হুমকির মতো বক্তব্যে রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে দারুণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে— “এইদিন দিন না” বলার অর্থ কি আগামীতে সে আবার ফিরে এসে প্রতিশোধ নেবে? কিংবা এটি কি বিচার বিভাগের প্রতি অঘোষিত হুমকি?

নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে এই মামলার গতি কী হয় এবং সোলায়মান সেলিমের কথিত 'আরও দিনের' অর্থ কী দাঁড়ায়।

No comments found