জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সতর্ক করে বলেছেন, বিদেশি পরিকল্পনায় নির্বাচন হলে দেশের মানুষ জীবন ও রক্ত দিয়ে সুষ্ঠু ভোট আদায় করবে। বিজয়নগরে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনগত স্বীকৃতি দাবি করেন।
রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এক শক্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, যদি দেশের জাতীয় নির্বাচন বিদেশি চক্রান্ত ও নকশা অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তবে দেশের সাধারণ মানুষ জীবন ও রক্তের বিনিময়ে হলেও একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করবে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচি ছিল ‘জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর আইনগত স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে এবং সেই ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে। সমাবেশে অংশ নিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিজয়নগরে সমবেত হন।
তাহের তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় আছে। তাদের আশা ও আস্থার সঙ্গে কেউ প্রতারণা করতে পারবে না। যারা সংস্কারের নামে ধোঁয়াশা তৈরি করছে, তারা মূলত নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি এখন সময়ের দাবি। এই ভিত্তি স্বীকৃতি দিয়ে তারপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নইলে দেশের জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।”
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীনদের প্রভাবে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়েছে। তারা বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে একটি আইনগতভাবে বৈধ রোডম্যাপ দরকার, যা জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
এ সময় উপস্থিত নেতারা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং জানান যে এই আন্দোলন শুধু জামায়াতের নয়, বরং দেশের প্রতিটি ন্যায়প্রিয় নাগরিকের। তারা মনে করেন, যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিদেশি শক্তি বা গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ থাকে, তাহলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
বক্তারা দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা জানান, সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রয়োজনে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে জনগণ প্রস্তুত। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল নানা বয়সের পুরুষ ও নারী, যারা হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার এবং স্লোগানে মুখর ছিলেন।
তাহের তার বক্তৃতার শেষাংশে স্পষ্ট বার্তা দেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে আমাদের অধিকার আদায় করতে চাই। কিন্তু যদি সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়, তাহলে দেশবাসী যে কোনো পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভোটের লড়াই চালাবে।”
সমাবেশ শেষে বিজয়নগর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে আশপাশের এলাকায় প্রদক্ষিণ করে।