আগামী ডিসেম্বরে দেশে ভয়ানক রাজনৈতিক সংঘাত হতে পারে বলে মন্তব্য ঘিরে নতুন বিতর্ক। সাংবাদিক মাসুদ কামাল জানালেন, দর্শকদের উদ্বেগ অমূলক নয়, নির্বাচনও হতে পারে ফেব্রুয়ারিতে।
আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এক ভয়ানক রাজনৈতিক সংঘাত ঘটতে পারে—এমন এক মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। সম্প্রতি সাংবাদিক মাসুদ কামালের ইউটিউব চ্যানেল *‘কথা’*য় একজন দর্শক এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবারের এক আলোচনায় এই মন্তব্যটির ব্যাখ্যা দেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল।
মোহাম্মদ ইউসুফ নামের ওই দর্শক তার মন্তব্যে লিখেছিলেন, “আমার মনে হয় সহসা নির্বাচন হচ্ছে না। কেন জানি মনে হচ্ছে ডিসেম্বরে দেশে ভয়ানক রাজনৈতিক সংঘাত ঘটবে।” এই মন্তব্য নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আলোচনা।
‘দর্শকের কথা’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে ইউসুফের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মাসুদ কামাল বলেন, “ইউসুফ সাহেবের কেন এমন মনে হচ্ছে আমি নিশ্চিত নই। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, একই ধরনের আশঙ্কা আমি আরো অনেকের কাছ থেকেই শুনেছি। তাদের মধ্যে কারো কারো ধারণা, বর্তমান সরকার হয়তো শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ নাও পেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, অনেকেই তাকে কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তবে সেগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনায় যেতে চাননি। তার মতে, জনগণের এই শঙ্কা আসলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে জন্ম নিচ্ছে।
তাহমিনা আক্তার নামের এক দর্শক মন্তব্য করেন, “মাসুদ কামাল ভাই, বুঝতে পারছেন খাল কেটে কুমির এনেছিলেন কিনা?” এর জবাবে মাসুদ কামাল বলেন, “তার বক্তব্যের অর্থ হলো, পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অনিয়ম নিয়ে আমি সব সময় কথা বলেছি। তার মতে, এসব কারণেই আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। কিন্তু এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা যেন কুমিরের মতো আচরণ করছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণের বদলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি করছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, রাজনীতির ক্ষেত্রে কে কুমির আর কে খাল—এটা আগে থেকে বোঝা কঠিন। তবে অন্তত তিনি স্বীকার করেন যে, বর্তমান সরকার এখনো জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
অন্যদিকে, সোহেল রানা নামের একজন দর্শক লিখেছেন, “আমার মনে হয় না নির্বাচন হবে। হইলেও ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নির্বাচন হবে না। বরং ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জিত, অসম্মানিত ও বাজে নির্বাচন হবে।
এ মন্তব্যের জবাবে মাসুদ কামাল বলেন, “সোহেল সাহেব কেন এমন মনে করছেন তা স্পষ্ট করেননি। তবে জনগণের মধ্যে যে এই ধরনের শঙ্কা রয়েছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। আমিও মনে করি, নির্বাচন হয়তো ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে ঠেকতে পারে। কিন্তু এই নির্বাচন ইতিহাসে সেরা কোনো নির্বাচন হবে না।
তার মতে, এ ধরনের আশঙ্কার কারণ হলো বিপুলসংখ্যক ভোটার হয়তো এই নির্বাচনে তাদের পছন্দের প্রার্থী কিংবা প্রতীক খুঁজে পাবে না। ফলে নির্বাচনের বৈধতা এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হবে।
দেশে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও আশঙ্কা একসাথে কাজ করছে। সাংবাদিক মাসুদ কামালের বক্তব্যে যেমন ফুটে উঠেছে অনিশ্চয়তার ছায়া, তেমনি দর্শকদের মন্তব্যগুলো থেকেও বোঝা যায়, ডিসেম্বর কিংবা ফেব্রুয়ারি—যখনই নির্বাচন হোক না কেন, তা ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সংঘাত ও বিতর্ক অনিবার্য হয়ে উঠছে।