বর্তমানে ধর্ষণ মামলার বিচারে ডিএনএ রিপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, ডিএনএ রিপোর্ট সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে দীর্ঘ সময় লেগে যায়, যা বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, বিচারক যদি মনে করেন মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচার সম্ভব, তাহলে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই বিচারকাজ পরিচালনা করতে পারবেন।
ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে সময়সীমা হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে তদন্তের জন্য ৩০ দিন এবং বিচারের জন্য ১৮০ দিন সময় নির্ধারিত রয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে তদন্তের সময় ১৫ দিন এবং বিচার প্রক্রিয়া ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার বিধান রাখা হয়েছে।
ধর্ষণ মামলার বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ সেল গঠন করা হবে, যা মামলাগুলোর অগ্রগতি তদারকি করবে। এছাড়া, শিশু ধর্ষণের মামলাগুলো আলাদাভাবে বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ধর্ষণের সময় বা ধর্ষণের উদ্দেশ্যে যদি কোনও জখম করা হয়, সেটাকেও কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সম্প্রতি মাগুরায় আট বছরের শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। ডিএনএ রিপোর্টের জন্য বছরের পর বছর মামলা ঝুলে থাকার কারণে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো এই সমস্যাগুলো নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধর্ষণ মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর ও কার্যকর করতে প্রস্তাবিত এই আইন সংশোধনীগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে বিচারকাজ পরিচালনা, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার সময়সীমা হ্রাস, বিশেষ সেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এই উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করবে। এতে করে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিরা দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন এবং সমাজে এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।