বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সতর্ক করে বলেছেন, ধমক বা ভয় দেখিয়ে নির্বাচন থামানো যাবে না। ঐক্যবদ্ধ জনতার শক্তিই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করবে।
ধমক বা ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশের নির্বাচনী অগ্রযাত্রা বন্ধ করা যাবে না—এমন দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, যারা এই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তারা গণতন্ত্রের শত্রু এবং জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় আনতে চান না।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জিয়া উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে নবনির্বাচিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, “কেউ কেউ প্রকাশ্যে বলছেন, নির্বাচন হতে দেবেন না। এসব বক্তব্যের ভেতর দিয়েই স্বৈরাচারের পদধ্বনি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই ধরনের হুমকি দেশের জন্য কোনো শুভ বার্তা বহন করে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো প্রচেষ্টা জনগণ প্রতিহত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা ধমক দিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা জনগণের প্রকৃত চাহিদা ও অধিকার সম্পর্কে উদাসীন। ইতিহাস সাক্ষী, একক গোষ্ঠীর আন্দোলনে নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ ছাত্র ও জনতার আন্দোলনই একসময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। আজও দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে, গণতন্ত্রকে রক্ষার সেই শক্তি পুনরায় ফিরে আসবে।”
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা মনে করেন, দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফেরাতে হলে ভয় বা হুমকির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র কোনো দলের দান নয়, এটি জনগণের মৌলিক অধিকার। জনগণের সেই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে চাইলে, তা রুখে দেওয়া হবে।”
আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিও ইঙ্গিত দেন। তার ভাষায়, “যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে। এভাবে চলতে থাকলে জনগণের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যাবে।”
ডা. জাহিদ হোসেন বিশ্বাস করেন, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্র সুসংহত হবে। “গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই সংগ্রাম কোনো দলের একার নয়, এটি গোটা জাতির।”
তিনি উপস্থিত নবনির্বাচিত ড্যাব নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা চিকিৎসক হিসেবে যেমন মানুষের সেবা করে থাকেন, তেমনি গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনেও আপনার ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ একটি সুস্থ রাষ্ট্রই পারে তার জনগণকে সুস্থ জীবন দিতে।”
শেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ধমক, ভয়, হুমকি—কোনো কিছুই নির্বাচনের অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না। জনগণই এই যাত্রার চালক, আর তাদের ইচ্ছাকেই শ্রদ্ধা করতে হবে।”