বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, "ধাক্কা দিলে আমার লোক কি আঙুল চুষবে?" নির্বাচন কমিশনে সাম্প্রতিক ঘটনায় তার এ মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতা ও আইনজীবী রুমিন ফারহানা সাম্প্রতিক এক ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে ঘটে যাওয়া এক বিরূপ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমার লোকজনকে যদি ধাক্কা দেওয়া হয়, তাহলে কি তারা আঙুল চুষবে? তারা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকবে কেন?” তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন নির্বাচন কমিশনে সীমানা পুনর্নির্ধারণ ইস্যুতে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে রুমিন ফারহানা ও অপর রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। উপস্থিত লোকজন জানান, কমিশনে শুনানি চলাকালে এক পর্যায়ে শারীরিক ধাক্কাধাক্কির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় রুমিন ফারহানার দলের কিছু সমর্থক ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তিনি নিজেও প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলছি। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এখানে যদি কাউকে ধাক্কা দেওয়া হয়, অপমান করা হয়, তাহলে তারা নিশ্চুপ থাকবে কেন? তারা প্রতিরোধ করবে—এটাই স্বাভাবিক।” তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি কমিশনের ভেতরে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বিরোধী দলের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেওয়া। এ প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, “ভোটের মাঠে জনগণের অংশগ্রহণ ঠেকাতে সরকার সব ধরনের কৌশল ব্যবহার করছে। নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ আচরণ করছে না।”
তবে আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাসীন পক্ষ বলছে, বিএনপি ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। তাদের দাবি, বিরোধী দল আলোচনায় না টিকে গায়ে-গতরে নামতে চাইছে। এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গন নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রুমিন ফারহানার এই বক্তব্য সাধারণ জনগণের ভেতরে যেমন কৌতূহল তৈরি করেছে, তেমনি বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জাগিয়েছে। তার মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, বিএনপি কোনোভাবেই পিছু হটতে চায় না। বরং তারা চাইছে, যেকোনো ধরনের চাপ বা হুমকির জবাব শক্তভাবে দেওয়া হোক।
নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এই উত্তপ্ত মুহূর্ত এখন সারা দেশের আলোচনার বিষয়। অনেকে মনে করছেন, কমিশনকে আরও সতর্কভাবে শুনানি পরিচালনা করতে হবে যাতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাতে রূপ না নেয়।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই রুমিন ফারহানার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলছেন, “ধাক্কা দিলে নিশ্চয়ই হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।” অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক নেতাদের আরও সংযত হওয়া উচিত।
সব মিলিয়ে, নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। রুমিন ফারহানার এই উক্তি শুধু রাজনৈতিক অঙ্গন নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন কীভাবে এই অস্থিরতা সামাল দেয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে।