ঢাকার রাস্তায় প্রেম আছে, পরিকল্পনা নেই!
জ্যামের শহরে রিকশা ও ধৈর্যই শেষ ভরসা, কিন্তু কতদিন?
সুমন হাওলাদারঃ
রাজধানী ঢাকার রাস্তায় এখন কার্যত দু’টি বাহনই সচল—রিকশা আর ধৈর্য। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই শহরে ধৈর্যশীল যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কারণ, দীর্ঘক্ষণ জ্যামে বসে থেকে একসময় কারও না কারও ধৈর্যের “ইঞ্জিন হিট” খেয়ে যায়।
এই শহরে ‘সবাই চলে, কিন্তু কেউ এগোয় না’। কখনো বাস দাঁড়িয়ে থাকে রিকশার পেছনে, কখনো মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে বাসের পেছনে, আর প্রশাসন দাঁড়িয়ে থাকে ‘দায়িত্বের বাইরে’।
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা এখন যেন এক বিরাট সার্কাস। এখানে কেউ ট্রাফিক পুলিশ, কেউ জ্যামের জাদুকর, কেউবা হর্ন বাজানো ক্লাউন। আর এই সার্কাসের দর্শক? আমরা, জনগণ—হতভাগ্য টিকিট কাটা যাত্রী, যাদের গন্তব্য প্রতিদিন অনিশ্চয়তায় ঢাকা পড়ে থাকে।
প্রশ্ন থেকেই যায়—এ শহরে যদি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোডের নাম হয় ‘প্রগতি সরণি’, তবে নিঃসন্দেহে পরবর্তী রাস্তার নাম হওয়া উচিত ‘প্রতীক্ষা গলি’। সেখানে কেউ হাঁটে না—মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জীবন পার করে।
সরকারের প্রতি নাগরিকদের আজ একটাই অনুরোধ—যদি এই শহরটিকে সত্যিই বাসযোগ্য করতে চান, তাহলে আগে একটু চোখ রাখুন রিকশা আর বাসের সেই চিরন্তন প্রেম কাহিনির দিকে। কোথায় গিয়ে তারা থেমে থাকে? প্রেমের জ্যাম না খুলুক, অন্তত রাস্তার জ্যাম যেন কিছুটা হালকা হয়।
আর আমরা নাগরিকরা? আমরা এখনো অপেক্ষায় আছি—সেই দিনের জন্য, যেদিন ঢাকার রাস্তায় শুধু গাড়ি না, চলবে পরিকল্পনাও।