সুমন হাওলাদারঃ
ঢাকার বাড্ডা এলাকার প্রধান সড়কে রবিবার সকালে দেখা গেল এক বিশাল জনসমাগম। ভোরবেলা থেকেই শতাধিক মানুষ টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই—স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন চাল, ডাল, তেল, ও চিনি সংগ্রহ করা। কিন্তু টিসিবির পণ্য বিতরণের ব্যবস্থাপনা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে চরম হতাশা ও ক্ষোভ।
সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এই লাইনে উপস্থিত ছিলেন নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ এবং শিশুরা। সময় কাটছে কিন্তু ট্রাক আসার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও খালি হাতে ফিরে গেছেন।
টিসিবির পণ্য বিতরণের এই অনিশ্চয়তা ও ব্যবস্থাপনার অভাব নিয়ে কথা বললেন অপেক্ষমাণ এক বৃদ্ধ। তিনি বলেন, "ভাই, এখানে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকি। কোনোদিন ট্রাক আসে দুপুর ১২টায়, কোনোদিন ২টায়। এমনও হয়েছে, ট্রাকই আসেনি।"
একজন গৃহবধূ জানান, "সকাল ৮টায় এসেছি। এখন বেলা ১১টা, কোনো খবর নাই। ছোট বাচ্চাটা বাসায় রেখে এসেছি। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো?"
এই লাইন শুধু সময়ের অপচয় নয়, এটি শারীরিক ও মানসিক কষ্টেরও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপেক্ষমাণ মানুষের জন্য নেই কোনো ছায়া বা বসার ব্যবস্থা। নারী ও পুরুষদের পৃথক লাইনের কোনো উদ্যোগও দেখা যায়নি।
একজন দিনমজুর বলেন, "একটা কেজি চাল কম দামে পেতে গেলে আজ সারাদিন কামাই গেলো। এটা কেমন বিচার?"
টিসিবির লক্ষ্য ছিল—নিম্নআয়ের মানুষ যেন বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে নিত্যপণ্য পায়। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। এখানে নেই সময়ানুবর্তিতা, নেই ব্যবস্থাপনা, বরং আছে ক্ষোভ, অপেক্ষা, ও হতাশা। এই পরিস্থিতি শুধু মানবিক নয়, এটি প্রশাসনিক দুর্বলতারও প্রতিচ্ছবি।
সরকারের উচিত এই ব্যবস্থাপনাকে আরও সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী করা, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য সহজে এবং সুষ্ঠুভাবে সংগ্রহ করতে পারে। এই বিশৃঙ্খলা দূর করতে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও মনিটরিং।