সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। নগরবাসীর ভোগান্তির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছে দলটি।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ ঘিরে ঢাকার সড়কে তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ। শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী মানুষের ঢল নামে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো নেতাকর্মী ও সমর্থকের অংশগ্রহণে এ সমাবেশে বিশাল জনসমাগম সৃষ্টি হয়।
সমাবেশ উপলক্ষে শুক্রবার রাত থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। ভোর হওয়ার আগেই পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সকালের দিকে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকেই আশপাশের সড়কেই অবস্থান নিতে শুরু করেন। ফলে বাংলামোটর, শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মৎস্যভবন, পুরানা পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় যান চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হয়।
ঢাকা শহরের কর্মজীবী মানুষ যারা শনিবার সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন, তাদের অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে আটকে ছিলেন। অনেক এলাকায় গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এই পরিস্থিতির জন্য নগরবাসীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি গুগল ম্যাপসহ পোস্ট করে বলা হয়,
সুপ্রিয় নগরবাসী, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের কারণে সৃষ্ট সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আপনাদের সুবিধার্থে ম্যাপটি সংযুক্ত করা হলো।
জামায়াতের নেতাদের দাবি, এই জাতীয় সমাবেশে অংশ নিতে সারাদেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় এসেছেন। এতো বড় আকারের জনসমাবেশ ঢাকার কেন্দ্রস্থলে হওয়ায়, কিছুটা যানজট সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই তারা উল্লেখ করেন। তবে তারা বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য, এবং নগরবাসীর ভোগান্তিকে তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
সমাবেশস্থলে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত রয়েছেন এবং তারা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশজুড়ে দলীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুনে ভরে গেছে। উচ্ছ্বসিত কর্মীদের স্লোগানে মুখরিত পুরো এলাকা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বিশাল জনসমাগম রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি অস্বীকার করা যায় না, তবে দলটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত দুঃখপ্রকাশ এক ধরনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেকেই।
এই জাতীয় সমাবেশের মাধ্যমে দলটি রাজনৈতিকভাবে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চাচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের মত।