close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। চার দফা দাবির মূল বিষয়বস্তু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। চার দফা দাবির মূল বিষয়বস্তু বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ যে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে, তার মধ্যে রয়েছে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ হিসেবে প্রশাসনিকভাবে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শহিদ নজির আহমদ দিবস’ ঘোষণা করা। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনের জন্য সরকারকে প্রস্তাব প্রদান। ঔপনিবেশিক আমলে মুসলমানদের ওপর পরিচালিত শোষণ-নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ওপর গবেষণা চালানোর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্টাডি সেন্টার প্রতিষ্ঠা। শহিদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “আমরা ইতিহাসে ভূমিকা রাখা সবার সম্মান ফিরিয়ে দিতে চাই। শহিদ নজির আহমদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর অ্যাসেম্বলিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। যদি দাবিগুলোর যথার্থতা পাওয়া যায়, তবে আমরা অবশ্যই শহিদ নজির আহমদকে সম্মান জানাব।” দিবস পালনের অংশ হিসেবে স্মারকলিপি প্রদান রোববার শহিদ নজির আহমদের ৮২তম শাহাদাত বার্ষিকীকে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। উপস্থিত নেতাকর্মীরা: আহ্বায়ক: আবদুল ওয়াহেদ সদস্য সচিব: ফজলুর রহমান যুগ্ম আহ্বায়ক: ইয়ামিন সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক: গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, নিয়াজ আহমদ সদস্য সচিব: মুহিব মুশফিক খান বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক: আরিফুল ইসলাম প্রসঙ্গ ও অন্যান্য কর্মসূচি সকাল ৯টায় শহিদ নজিরের সমাধিস্থল আজিমপুর কবরস্থানে জিয়ারতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো. শফিউর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক রাবেয়া আকতার, সহকারী সদস্য সচিব ডা. মাসুম বিল্লাহ ও সদস্য মো. মামুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন। পরে বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদ নজির আহমদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র ইমাম ও খতিব ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন। অনুষ্ঠানে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আবদুস সালাম ও সৌরভ শাকিল অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। শহিদ নজির আহমদের জীবন ও সংগ্রাম শহিদ নজির আহমদ ঔপনিবেশিক শাসনামলে তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে ফেনী) আলিপুর গ্রামের একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করেও তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র ছিলেন এবং বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়ন করতেন। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম ছাত্র পরিষদের শীর্ষ নেতা ছিলেন। এক নির্মম হত্যাকাণ্ড ১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুরাতন ভবন) ক্লাস চলাকালীন মুসলমান ছাত্রদের ওপর কংগ্রেসপন্থি সাম্প্রদায়িক হিন্দু ছাত্ররা হামলা চালায়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে তারা শহিদ নজিরকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের ইতিহাসে প্রথম রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়। কলাভবনের নামকরণ নিয়ে বিতর্ক ও প্রত্যাশা শহিদ নজির আহমদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং তাকে যথাযথ সম্মান জানানোর জন্য কলাভবনের নামকরণ নিয়ে আলোচনা চলছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং শহিদ নজির আহমদের স্মৃতিকে অমর করে রাখবে।
Walang nakitang komento