close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ঢাবির হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে: উপাচার্য

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Dhaka University VC Prof. Dr. Niaz Ahmed Khan has declared that student politics will remain permanently banned in residential halls, strictly enforcing the 2024 policy against any open, hidden, or co..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ঘোষণা দিয়েছেন, আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ থাকবে। ২০২৪ সালের নীতিমালা অনুসারে কোনো প্রকাশ্য, গোপন বা সুপ্ত রাজনৈতিক কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ থাকবে—এমন কঠোর ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এই অবস্থান স্পষ্ট করেন।

উপাচার্য বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটি বহাল থাকবে এবং প্রতিটি হল প্রশাসন নীতিমালা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে, ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়ে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে, তবে রাজনৈতিক কার্যক্রমের অনুমতি কোনোভাবেই দেওয়া হবে না।

এই ঘোষণার পরেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে দাবি জানায়, হলে ছাত্ররাজনীতির সম্পূর্ণ অবসান ঘটাতে হবে এবং যারা গোপনে বা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কমিটি পরিচালনা করছে, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তারা উপাচার্যের কাছে ছয় দফা দাবি তুলে ধরে—
১. কেন হল কমিটি দেওয়া হয়েছে তার জবাব উপাচার্যকে দিতে হবে।
২. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ সকল গোপন কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের একাডেমিক এলাকায় রাজনীতির সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রকাশ করতে হবে।
৪. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৫. হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন করতে হবে।

শুক্রবার দুপুর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ঢাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ, সেখানে ছাত্রদলের প্রকাশ্য কমিটি ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম দেয়।

রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরাই প্রথমে প্রতিবাদে নেমে আসেন। সন্ধ্যার পর থেকে আন্দোলনের মাত্রা ক্রমে বাড়তে থাকে। রাত ১২টার পর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখান থেকে তাঁরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। রাত ২টার দিকে উপাচার্য নিজে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ঘোষণা দেন যে, কোনো অবস্থাতেই হলপলিটিক্স ফিরবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে— ২০২৪ সালের নীতিমালা অনুযায়ী প্রকাশ্য, গোপন বা সুপ্ত— কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম হলের ভেতরে সহ্য করা হবে না। যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতির এই নিষেধাজ্ঞা অনেক শিক্ষার্থীর কাছে স্বস্তির হলেও, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় অংশের কাছে এটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা ও হলে শান্তি বজায় রাখতে এই নীতি অপরিবর্তনীয় থাকবে।

No comments found