বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে এখন এমন এক অবস্থা চলছে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই জানে না তারা কী দাবি করছে। পিআর নির্বাচনের কথা বললেও তারা এ পদ্ধতি সম্পর্কেই অজ্ঞ।
দেশে চলছে রাজনৈতিক ‘জগা খিচুড়ি’, নিজেরাই জানে না কী চায়: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে এমন এক রাজনৈতিক ‘জগা খিচুড়ি’ পরিস্থিতি চলছে, যেখানে কিছু রাজনৈতিক দল এমন পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করছে, যার সংজ্ঞা বা কার্যকারিতা তারা নিজেরাও বোঝে না।
শনিবার (২৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পতন ও জুলাই-২৪ বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে ‘জিয়া পরিষদ’।
আলোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকাল কিছু দল আনুপাতিক নির্বাচন বা ‘প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর)’ পদ্ধতির কথা বলে। কিন্তু তারা নিজেরাই জানে না এই পদ্ধতি কী, কীভাবে কাজ করে। দেশের জনগণও বিষয়টি বোঝে না। ফলে এসব দাবি শুধু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে শুধু একনায়কতন্ত্র চালিয়ে গেছে। বিচার বিভাগ, আইন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যখাত—সবই তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা শুধুমাত্র স্বৈরাচারী পন্থায় ক্ষমতা চর্চা করেছে এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের স্ট্রাকচার, সংগঠনগুলোকে ছত্রভঙ্গ করেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “সংস্কার রাতারাতি হয় না। একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আপনি চাইলেই পুলিশ কাল থেকে ঘুষ নেওয়া বন্ধ করবে—এটা ভাবা ঠিক নয়। বরং একটা কাঠামো তৈরি করতে হবে, যাতে ঘুষ নেওয়ার সুযোগ না থাকে।”
তিনি এই প্রেক্ষাপটে মনে করিয়ে দেন, “২০১৬ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ‘ভিশন টুয়েন্টি থার্টিন’ ঘোষণা করেছিলেন। আর আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ সালে জাতিকে ৩১ দফার রূপরেখা দিয়েছেন, যেটা দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমূল পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে সততা। এই সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। আজকের কিছু সংবাদ আমাদের হৃদয়ে আঘাত দেয়, কারণ এসব খবর বিএনপির আদর্শের সঙ্গে যায় না। জিয়াউর রহমানের নীতি ছিল সততা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম। কাজেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবশ্যই তার আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “আমরা যখন নির্বাচন চাই, তখন বলা হয় বিএনপি ক্ষমতার লোভে আছে। কিন্তু আমরা নির্বাচন চাই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য, জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ, আর সেটি সম্ভব জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে।”