এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, দেশে হাজার হাজার কোটি ডলার লুটপাট নিয়ে টকশো হয় না, অথচ হাঁসের মাংস কে খেল তা নিয়েই সপ্তাহজুড়ে বিতর্ক হয়।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও গণআলোচনার ধরণ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে প্রকৃত সংকট ও গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুগুলোকে আড়াল করে সাধারণ ও তুচ্ছ বিষয়কে বড় করে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “এই দেশে ২৫০ বিলিয়ন ডলার লুটপাট হয়েছে, অথচ এ নিয়ে কোথাও কোনো আলোচনা হয় না। টকশোগুলোতে জনগণের কষ্ট, দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় কিংবা দুর্নীতির বিষয় আলোচিত হয় না। বরং হাঁসের মাংস কে খেল, কোথায় খেল—এইসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সপ্তাহের পর সপ্তাহ এজেন্ডা বানানো হয়, বয়ান তৈরি হয়।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ অভিযোগ করে বলেন, “আজকে ৫ লাখ টাকার চোরকেও দেশের সবচেয়ে বড় অলিগার্ক বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। ছোট অপরাধকে বড় করে দেখিয়ে আসল অপরাধ ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ সত্য জানতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রশ্নে যারা আওয়াজ তুলছেন, তাদের স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে—এখন যে কোনো নির্বাচন হতে হলে তা জুলাই সনদের অধীনে হতে হবে, জনগণের গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তিতে হতে হবে। অন্যথায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চাওয়ার কোনো এখতিয়ার কারো নেই।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ জোর দিয়ে বলেন, “আমি আর কোনো চুপ্পুর অধীনে শপথ নিতে চাই না। এটা কোনো সম্মানজনক বিষয় নয়। এটা হবে জনগণের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আমাদের দেশের মানুষ জীবন দিয়েছে, ত্যাগ করেছে—সেটা কোনোভাবেই অবজ্ঞা করা যাবে না।”
তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধান ও তৎকালীন শপথ প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গত বছর আমরা যে শপথের বিতর্ক দেখেছি, সেটাতে আমরা ফিরতে চাই না। আমাদের দাবি, আগামী সংসদের জন্য নতুনভাবে শপথ প্রস্তাব করা হোক। এমপিরা যেন শুধু নির্বাচিতই না হন, তারা জুলাই সনদের অধীনে শপথ নেন।”
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, “২৪০০ মানুষ জীবন দিয়েছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আজও যদি আমাদেরকে চুপ্পুর অধীনে শপথ নিতে হয়, তাহলে সেটা তাদের আত্মত্যাগকে অসম্মান করার শামিল হবে।”
ফুয়াদের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে গণমাধ্যম ও টকশোগুলোকে উদ্দেশ্য করে তার সরাসরি সমালোচনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, দেশের মূল সংকট নিয়ে যদি জাতীয় আলোচনা না হয়, তবে গণঅভ্যুত্থান ও জনতার দাবি পূরণ সম্ভব নয়।