শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় আদালতের নির্দেশে দীর্ঘদিনের জমি বিরোধ সমাধান হয়ে অবশেষে চলাচলের রাস্তা ফিরে পেয়েছেন মৃত বিলায়েত গাজীর ছেলে আহম্মদ আলীর পরিবার। রবিবার (১০ আগস্ট '২৫) এই রায় কার্যকর হওয়ায় পরিবারটি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে।
জানা যায়, দেবহাটা মৌজার ১৪৬০ খতিয়ানের দাগ নং-২৪৫৬, ২৪৫৭, ২৪৫৮ ও ২৪৫৯ দাগের জমিতে যাওয়ার একটি চলাচলের পথ ছিল, যা পৈতৃক সূত্রে আহম্মদ আলীর পরিবার ভোগ করত। কিন্তু তার ভাই মোহাম্মাদালী ও শাহাজান আলীর সাথে এই পথ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ পরিস্থিতিতে আহম্মদ আলী দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদে বিচার প্রার্থনা করেন। গ্রাম্য আদালতে ধার্য দিনে অপরপক্ষ উপস্থিত না হওয়ায় আহম্মদ আলীর পক্ষে রায় প্রদান করা হয়।
এরপর আহম্মদ আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সুবিচারের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে মাপ-জরিপের মাধ্যমে চলাচলের রাস্তার স্কেচ ম্যাপে নকশা অঙ্কন করেন এবং সীমানা নির্ধারণ করেন। এরপরও বিবাদী পক্ষ আহম্মদ আলীর পরিবারকে হয়রানি করে আসছিল।
২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি আহম্মদ আলী ৫১৯ নং দলিলে উক্ত জমি থেকে ০.৫৬৫০ একর জমি কন্যাদের নামে রেষ্ট্রিভূক্ত করে দেন। দলিল অনুযায়ী কন্যারা ১৫৯৩ নাম জারি খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত হন। তবুও উক্ত জমিতে চলাচলের রাস্তা আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে আহম্মদ আলীর মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে ১৩৩ ও ১৪২ ধারা মোতাবেক প্রতিকার প্রার্থনা করে মামলা দায়ের করেন।
আদালত উক্ত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে চলতি বছরের ২৮ জুলাই চলাচলের পথ উন্মুক্ত এবং কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার মর্মে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট দেবহাটা থানা ওসির সহযোগিতায় পথ পুনরায় উন্মুক্ত এবং চলাচলের উপযুক্ত করা হয়।
এই রায়ের ফলে আহম্মদ আলীর পরিবার স্বস্তি ফিরে পেয়েছে এবং মামলার বাদী আদালত ও দেবহাটা থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় পর্যায়ে জমি বিরোধের সমাধানে একটি ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।