ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পুনঃভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে আলোড়ন তুলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এবার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই বিপ্লবের সম্মুখ সারির সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিচিত মুখ এই তরুণ নেতা এবার সরাসরি ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি নাহিদ ইসলাম সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স প্রোগ্রামে পুনঃভর্তি হয়েছেন। গত রোববার তার ভর্তি সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়। এই পুনঃভর্তির মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ইতোমধ্যেই তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, “নাহিদ ইসলাম মাস্টার্সে পুনঃভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি পূর্বে মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করেননি, তাই পুনঃভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের মতে, নাহিদ ইসলাম শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি ছাত্র অধিকার ও গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠস্বর। জুলাই বিপ্লবসহ বিভিন্ন আন্দোলনে তার উপস্থিতি ও নেতৃত্ব শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করেছে। এবার ডাকসু নির্বাচনে তার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্তি সেই অনুপ্রেরণার ধারাবাহিকতাকে আরও জোরদার করবে বলে অনেকের ধারণা।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক অবস্থান ও জনপ্রিয়তা নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি অনেকের কাছে প্রতীকী গুরুত্ব বহন করছে, কারণ তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। কিছু শিক্ষার্থী মনে করছেন, এই অন্তর্ভুক্তি ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং ছাত্র রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে, নাহিদ ইসলামও নিজেকে এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক চর্চার ধারাকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, নাহিদ ইসলামের মতো অভিজ্ঞ ছাত্রনেতার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি শুধু ডাকসুর জন্যই নয়, পুরো ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে। অনেকে মনে করছেন, এটি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের হার বাড়াতে সাহায্য করবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা জাগিয়ে তুলবে।
সব মিলিয়ে, ডাকসু নির্বাচনে নাহিদ ইসলামের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উচ্ছ্বাস, প্রত্যাশা ও আলোচনার নতুন তরঙ্গ সৃষ্টি করেছে। তার রাজনৈতিক যাত্রা ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘদিনের অবদান এবার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।