কেন্দ্রীয় নির্দেশনার অভাবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একে একে মনোনয়ন ফরম কিনছেন, নির্বাচনের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও রাজনীতিতে নতুন ধাক্কা হিসেবে এ বছর ডাকসু নির্বাচন নিয়েও তৈরি হয়েছে এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এই পরিস্থিতিতে এককভাবে মনোনয়ন ফরম কিনতে শুরু করেছেন, যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়নি।
সোমবার, ১৮ আগস্ট, মনোনয়ন ফরম কেনার শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন এবং হল সংসদগুলোয় ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ ছাত্রদলীয় নেতাকর্মী নিজ উদ্যোগে ফরম সংগ্রহ করছেন। যদিও তারা মনোনয়ন ফরম কিনছেন, কিন্তু এখনও কেউ নিশ্চিত নন যে কোথায় ভোট দেবেন—কেন্দ্রে নাকি হলে। এই অনিশ্চয়তার কারণে অনেকেই নিজেদের অনুমান ও ধারনার ওপর নির্ভর করে ফরম সংগ্রহ করছেন।
একাধিক নেতাকর্মী, যারা নাম প্রকাশ করতে চায়নি, জানান, “আজ মনোনয়ন ফরম কেনার শেষ দিন। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে আমাদের এখনও কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা এক প্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যেই ফরম কিনেছি। এখন সেন্ট্রালে ফরম কিনেছি, কিন্তু পরে দেখা যাবে হলে নির্বাচন করার জন্য বলা হবে। সেই ক্ষেত্রে আমরা ঝামেলায় পড়তে পারি। তাই আমরা হলের জন্যও ফরম কিনে রাখছি।”
তাদের অভিযোগ, দুই জায়গায় ফরম কেনার ফলে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। এছাড়া, দল থেকে মনোনয়ন পাবেন কি না, সেটাও এখনও অনিশ্চিত। অর্ধেক সময় শেষ হলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এখনও কোনো চূড়ান্ত নির্দেশনা আসেনি।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কিছু নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন শাওন বলেন, “আমাদের সবাই ফরম কিনেছে। আমরা যাচাই-বাছাই শেষে আজ বা আগামীকাল প্যানেল ঘোষণা করব। একই সঙ্গে হলগুলোর জন্যও প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে চলমান।”
চূড়ান্ত না হওয়া কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এবং ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ গতি, নির্বাচনী উত্তেজনাকে আরও জটিল করেছে। নেতাকর্মীরা যে দুই জায়গায় ফরম কিনছেন, তা প্রমাণ করে যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে সতর্ক হতে হচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, ফরম সংগ্রহের এই দ্বিধা ও অনিশ্চয়তা শেষ পর্যন্ত ভোটারদের মনোভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, কেউ অনিশ্চয়তার এই পরিস্থিতিকে নেতিবাচক বলছেন, আবার কেউ মনে করছেন, এটি দলীয় স্বতন্ত্রতা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগের প্রকাশ। তবে নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া এখনও দেখার অপেক্ষায়।
ডাকসু নির্বাচনের এই অস্থিরতা এবং মনোনয়ন ফরম কেনার অনিশ্চয়তার মধ্যে, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একদিকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার অভাব অনুভব করছেন, অন্যদিকে ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হচ্ছেন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে বিবেচিত হবে।