close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ড. ইউনূসকে ঘিরে সাত সদস্যের ‘অশুভ চক্র’, রাজনীতিতে গভীর হচ্ছে অনিশ্চয়তা....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস কি রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ছেন? সাত সদস্যের অদৃশ্য একটি শক্তির ইশারায় কি থমকে যাচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ? গভীর হচ্ছে অনিশ্চয়তা, উত্তপ্ত হচ্ছে বিরোধী অঙ্গন।....

দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে এক বিস্ময়কর অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে তৈরি হয়েছে গভীর সংকট ও রহস্য। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার দূরত্ব দিনে দিনে বেড়ে চলেছে, এবং সর্বশেষ ঘটনার ভিত্তিতে বোঝা যাচ্ছে, তার চারপাশে একটি রহস্যময় সাত সদস্যের গোষ্ঠী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে—যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, ড. ইউনূসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বিএনপির একাধিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। চার দিন ধরে চেষ্টার পরও দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। একইভাবে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও একাধিকবার সর্বদলীয় আলোচনার আহ্বান জানানো হলেও ইউনূস নিরব থেকেছেন। তার এই নিরবতা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।

অপরদিকে, জাতীয় কনসেনসাস পার্টি (এনসিপি)-র সঙ্গে ইউনূসের সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক থাকলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এটি কৌশলগতভাবে সীমাবদ্ধ একটি যোগাযোগ মাত্র।

 রহস্যময় সাত সদস্যের চক্র—কে তারা?

ড. ইউনূসকে ঘিরে ‘অদৃশ্য সাত’ নামে পরিচিত একটি গোষ্ঠীর তৎপরতা বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। এদের মধ্যে চারজন তার অভ্যন্তরীণ পরামর্শক এবং তিনজন দেশের বাইরে থেকে কার্যত নীতিনির্ধারণী চাপ প্রয়োগ করছেন বলে জানা গেছে। এই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য দেশের রাজনীতিতে নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা এবং জাতীয় ঐক্যমতের ধারাকে ভেঙে দেওয়া। তাদের পদক্ষেপগুলো ইউনূসকে জনগণ ও রাজনৈতিক মহল থেকে বিচ্ছিন্ন করার কৌশল বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এদের কেউ কেউ গোপনে গুজব ছড়াচ্ছে যে, ড. ইউনূস নাকি শিগগিরই পদত্যাগ করতে চলেছেন। অনেকে এমনও বলছেন, তিনি চাপের মুখে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন এবং একপ্রকার ‘বন্দী’ অবস্থায় রয়েছেন। যদিও বাস্তবে, ইউনূস এখনও পদত্যাগের কোনো আভাস দেননি। বরং, তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

 ড. আলী রীয়াজের সঙ্গে গোপন বৈঠক

সম্প্রতি ‘ঐকমত্য কমিশন’-এর ভাইস চেয়ারম্যান ড. আলী রীয়াজের সঙ্গে একটি একান্ত বৈঠক করেছেন ড. ইউনূস। বৈঠকটি হয় সম্পূর্ণ গোপনে, এবং এর বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং জনগণের মনোভাব ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

 বিএনপি-জামায়াতের নতুন সমন্বয়

ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সদিচ্ছার ইঙ্গিত মিলছে। সূত্র জানায়, তারা দুই দফায় বৈঠক করেছে, যার একটি মূল লক্ষ্য ছিল ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন আদায় এবং সরকারবিরোধী জোট গঠনের পরিকল্পনা।

এই পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—তিনি কি সত্যিই নিরপেক্ষ? নাকি কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর ইশারায় চলছেন?

 সংকটের শেষ কোথায়?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের একক পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। বরং তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা একদিকে যেমন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যদি তিনি সময়মতো কার্যকর সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তার হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। এমনকি দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতাও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।



যেখানে গোটা দেশ অপেক্ষায় নির্বাচন ও স্থিতিশীলতার, সেখানে একদল ‘অদৃশ্য শক্তি’ প্রতিনিয়ত পরিস্থিতিকে অস্থির করছে। ড. ইউনূসের চূড়ান্ত অবস্থান কি হবে, সেটাই এখন জাতীয় রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন।

No comments found