চট্টগ্রামে নির্বাচনি প্রচারণায় গুলিবিদ্ধ বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ — শহরজুড়ে উত্তেজনা
বাংলা শর্ট ডিসক্রিপশন:
চট্টগ্রামে নির্বাচনি প্রচারণার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। হামজারবাগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, হামলাকারীরা এখনও শনাক্ত হয়নি।
English Short Description:
BNP candidate Ershad Ullah was shot during his election campaign in Chattogram’s Hamzarbag area. The attack has sparked widespread tension, while police are investigating the motive and suspects.
চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ একটি গুলির ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনি গণসংযোগে অংশ নেওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তার সঙ্গে থাকা এক যুবকও গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় এরশাদ উল্লাহকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা জানান, তার পায়ে গুলি লেগেছে।
সন্ধ্যা নামতেই নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় হঠাৎ গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রচারণার সময় স্থানীয় লোকজন প্রার্থীর সঙ্গে ছবি তুলছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে কয়েকজন অজ্ঞাত যুবক দৌড়ে এসে গুলি চালায়। স্থানীয়রা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, “এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি প্রচারণায় গুলির ঘটনার খবর আমরা পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।” তিনি আরও জানান, হামলাকারীদের শনাক্তে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে।
এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তপ্ত আলোচনা শুরু হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বলে দাবি করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের আগে প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ এমন হামলা চালিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এরশাদ উল্লাহ গত সোমবার (৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন পান। এরপর থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে গণসংযোগ শুরু করেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন ঘোষণার মাত্র দুই দিনের মাথায় ঘটে গেল এই মর্মান্তিক হামলা, যা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বিএনপি নেতারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন ঘিরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য কিছু পক্ষ নিজেরাই এমন ঘটনার নাটক সাজাতে পারে।
নির্বাচনের আগে এমন হামলার ঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
চট্টগ্রামের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা নতুন করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন, যদি বড় দলের প্রার্থীর ওপর এমন হামলা হয়, তবে সাধারণ প্রার্থীরা কতটা নিরাপদ, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
বাংলাদেশের নির্বাচনি ইতিহাসে এই ধরনের সহিংসতা নতুন নয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। এখন সকলের দৃষ্টি পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের দিকে— তারা কীভাবে এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত করে এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তা দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।



















