চট্টগ্রামে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করেছে, যার ফলশ্রুতিতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। সম্প্রতি রাউজানে সংঘটিত সংঘর্ষের পর বিএনপি এই সিদ্ধান্ত নেয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা বিষয়টি গণমাধ্যমের সামনে নিশ্চিত করেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গিয়াস কাদের চৌধুরী তার এলাকায় দলের অভ্যন্তরে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। একাধিকবার সতর্ক করার পরও তিনি উসকানিমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে গেছেন, যা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। এই কারণে দলের গঠনতান্ত্রিক বিধান অনুযায়ী তাকে প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিটি দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব এবং ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিনের কাছে অনুলিপি আকারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানে বিএনপির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ ২০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
সংঘর্ষের পরে বিএনপি কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। দলের অভ্যন্তরীণ এই কোন্দল চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ঘটনা দলের প্রতি মানুষের আস্থা এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানোর জন্য দলে আরও কঠোর শৃঙ্খলা ব্যবস্থা প্রণয়ন করার প্রস্তাবও এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের একটি প্রতিফলন। দলের নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য দলের উচ্চ পর্যায়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।