সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সামাজিক বিশৃঙ্খলা নিয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন—চরিত্রহনন নয়, যুক্তি ও শালীনতা দিয়ে সমালোচনা হোক। তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমান সময়ের সমাজজীবনে একের পর এক বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব পরিস্থিতিকে ঘিরে সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব কেবল সরকারের নয়, বরং তা আমাদের সবার—রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল, ও সাধারণ জনগণের সমন্বিত দায়িত্ব।
রবিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সমাজে চলমান বিশৃঙ্খলার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই মানুষের অধিকার, কিন্তু সেটি হতে হবে শালীন ও যুক্তিনির্ভর। অন্যায়ের প্রতিবাদ হোক ভাষার সৌন্দর্য বজায় রেখে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত বা দলীয় চরিত্রহনন এখন যেন এক স্বাভাবিক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে, যা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়।
তিনি সতর্ক করেন, এই ধরনের আচরণ শুধু সামাজিক বিশৃঙ্খলাকেই উৎসাহিত করে না, বরং সমাজের মধ্যে বিষোদগার, বিভক্তি এবং অনৈক্য সৃষ্টি করে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দায়িত্বশীল আচরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এখন সময় সংযত এবং বিচক্ষণ হওয়ার। আমাদের প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে যেন কথাবার্তা ও সমালোচনার মাধ্যমে সমাজে অশান্তি না ছড়ায়।
জামায়াত আমির আরও বলেন, এই ক্রান্তিকালে জাতিকে প্রয়োজন ঐক্যের, সহযোগিতার ও সহমর্মিতার। জাতীয় স্বার্থে আমাদের একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কোনো দলীয় বিভাজন কিংবা ব্যক্তিগত আক্রমণের স্থান থাকবে না।
তার এই বার্তায় স্পষ্ট—তিনি সমাজে একটি দায়িত্বশীল, সংযত ও যুক্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা যেন সবাই আল্লাহর কাছে এই উপলব্ধি অর্জনের জন্য দোয়া করি, যাতে করে আমরা বিভ্রান্তির পথ থেকে ফিরে আসতে পারি এবং ঐক্য, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের পথে চলতে পারি।
সমাজে যুক্তিবিহীন ঘৃণা ছড়িয়ে পড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ও ব্যক্তিগত আক্রমণের পরিবেশে জামায়াত আমিরের এই বার্তাকে অনেকে সময়োপযোগী ও দায়িত্বশীল বিবেচনা করছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের বক্তব্য বিরল হলেও প্রয়োজনীয়তা অনেক। বিশেষত তখন, যখন মতপ্রকাশের নামে অনেক সময় বিভাজন ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জাতীয় ঐক্য এবং সমাজে যুক্তিভিত্তিক মতবিনিময়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হলে এমন অবস্থানই হতে পারে ভবিষ্যতের জন্য দিকনির্দেশনামূলক।