close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

চেক শার্ট, জিনস পরা শিশুর নিথর দেহ,সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে তদন্তে..

Jahid sumon Crime Correspondent avatar   
Jahid sumon Crime Correspondent
যাত্রাবাড়ীর হোটেলে অজ্ঞাত শিশুর লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ সঙ্গীকে খুঁজছে পুলিশ, তদন্তে উঠে আসছে নানা প্রশ্ন।..

জাহিদ হাসান :

ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে রহস্য এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছে স্থানীয় মহলে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে “সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনা” হিসেবে বিবেচনা করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানায়, সোমবার (তারিখ অনুযায়ী) দুপুরের দিকে আনোয়ারা আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার পরনে ছিল চেক শার্ট ও জিনস প্যান্ট।

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান বশির বলেন,শিশুটির নাম-পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আনুমানিক বয়স ১২ বছর। আমরা প্রাথমিকভাবে হত্যা সন্দেহ করছি, তবে সবকিছু তদন্তে পরিষ্কার হবে।

হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই দিন আগে এক যুবক শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে ওঠেন। রেজিস্টার বইয়ে ওই যুবকের নাম লেখা হয়েছে আল আমিন।

পুলিশ বলছে, সোমবার দুপুরে হোটেল কর্মীরা রুমটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান, যা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তারা যাত্রাবাড়ী থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে কক্ষে ঢুকে শিশুটির নিথর দেহ বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখে।

পুলিশ বলছে, শিশুটির ঘাড় মটকানো ছিল এবং ডান চোখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল ঘিরে প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে শিশুটির সঙ্গে থাকা যুবক আল আমিন ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ, এবং তার সন্ধানে অভিযান চলছে।

এসআই হাসান বশির বলেন,আমরা এই ঘটনার প্রতিটি দিক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

হোটেলটির রেজিস্ট্রেশন বই ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ তদন্তকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, কারা ভেতরে ঢুকেছে, কবে বের হয়েছে এবং ভিকটিমকে শেষ কবে জীবিত দেখা গেছে—এসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে তারা ভিডিও বিশ্লেষণ করছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিশুটির পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয় থানাগুলোতে নিখোঁজ ডায়েরি যাচাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের সহায়তায় শিশুটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

ঘটনার পেছনে সম্ভাব্য মানবপাচার, শিশুশ্রম, নির্যাতন কিংবা অনৈতিক কাজের সম্ভাবনাও তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা বলছেন, শিশুটিকে কিভাবে এবং কোন উদ্দেশ্যে হোটেলে আনা হয়েছিল—তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হওয়ায় বিস্তারিত যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই ধরনের ঘটনায় হোটেলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া, পর্যবেক্ষণ, এবং শিশু সুরক্ষা নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হোটেল মালিকদের আরও কড়াকড়ি এবং প্রশিক্ষিত ব্যবস্থাপনা দরকার।

একজন শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু আমাদের সমাজে শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং অপরাধ প্রতিরোধ কাঠামোর ফাঁকফোকর চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়।
এই ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে না থাকে—সেজন্য নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি স্থানীয়দের ।

তদন্তের অগ্রগতি ও শিশুটির পরিচয় জানার পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে

 

Hiçbir yorum bulunamadı