জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল হল ছাত্রদল কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী রাকিব মাওলা, যা ক্যাম্পাসে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন রাকিব মাওলা, যিনি অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এ ঘটনা প্রকাশের পর থেকেই ক্যাম্পাসে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে এটিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অবস্থান বদলের নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন নিয়োগ প্রক্রিয়া ও এর পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক স্বাক্ষরিত কমিটি প্রকাশিত হয়। সেখানে রাকিব মাওলার নাম সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঘোষণার পরপরই বিষয়টি শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
রাকিব মাওলা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে পরিচিত তিনি একজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে আলবেরুনি হলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এমনকি ফ্যাসিবাদ পতনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাকে ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়েও দেখা গিয়েছিল।
রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ করে অবস্থান বদল করে বর্তমানে তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রদল কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদল এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, এই নিয়োগে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, আবার কেউ মনে করছেন, ছাত্রদলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো ঘটনা এটি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে প্রমাণ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও শিক্ষার্থীদের একাংশ মনে করছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন অদলবদল প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে জটিল করে তুলতে পারে। অন্যদিকে, আরেক অংশের মতে, রাজনীতি পরিবর্তনশীল এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যে কেউ নতুন দলে যোগ দিতে পারে।
ঘটনাটি কেবল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, সারা দেশের রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনা ভবিষ্যতে আরও অনুরূপ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে এক দলের কর্মী অন্য দলে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে পারেন।