বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ট্যাগিং ও প্রোপাগান্ডার জবাব দিয়ে সময় নষ্ট না করে দেশের কল্যাণ ও শিক্ষার্থীদের উন্নয়নেই মনোযোগ দেবে শিবির।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, তার সংগঠন কোনো প্রকার ট্যাগিংয়ের রাজনীতিতে জড়াবে না এবং প্রোপাগান্ডার জবাব দিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করবে না। বরং দেশের উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা ও কল্যাণে নিজেদের সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় এ প্লাসপ্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে যে সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। কিছু রাজনৈতিক দল আমাদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, নানা ধরনের ট্যাগ লাগাচ্ছে। যারা এসব করে, তাদের নিজেদের কোনো বাস্তবসম্মত এজেন্ডা নেই। তারা শুধু অন্য দলকে আক্রমণ করাকেই রাজনীতির মূল লক্ষ্য বানিয়েছে, কিন্তু নিজেদের দেশ ও জাতির জন্য কোনো ইতিবাচক পরিকল্পনা নেই। এই ধরনের রাজনীতি আমরা চাই না।”
তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের নেতিবাচক রাজনীতির কবর রচনার জন্য ‘চব্বিশ’ ঘটেছে। এই আন্দোলনের জন্য আমার ভাই আবু সাঈদ জীবন দিয়েছেন। আমরা ট্যাগিং বা প্রোপাগান্ডার জবাব দিয়ে সময় নষ্ট করবো না, আমাদের লক্ষ্য হবে দেশের উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি।”
শিবির সভাপতি প্রাক্তন সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করে বলেন, “আমরা দেখেছি— মমতাজের মতো ব্যক্তি সংসদে গান গাইতে ব্যস্ত ছিলেন। সংসদ কি গান গাওয়ার জায়গা? যদি বিনোদনের আয়োজন করতে চান, তাহলে শিল্পকলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যান। রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সংসদকে বিনোদনের মঞ্চ বানানো গ্রহণযোগ্য নয়। নীতি নির্ধারণের জায়গায় সৎ ও যোগ্য মানুষ থাকলে আজ বাংলাদেশের এই দুর্দশা হতো না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা এমন এক প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি, যিনি গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ‘যত ইচ্ছা মেরে ফেল’। রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে রাষ্ট্রকে ধ্বংস করা এবং জনগণকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া এক ভয়ংকর রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত। চব্বিশ হঠাৎ করে হয়নি— এটি ছিল ইতিহাসের দাবি, সময়ের দাবি, এবং অনিবার্য বাস্তবতা।”
জাহিদুল ইসলাম রাজনীতির মূল দর্শন তুলে ধরে বলেন, “রাজনীতি মানে হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রকে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন করা। ভালো মানুষ যদি নীতি-নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় না থাকে, তাহলে কোনো রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আমরা এমন রাজনীতি চাই না যেখানে নীতি নেই। আমরা নীতি-ভিত্তিক, উন্নয়নমুখী রাজনীতি চাই, যার জন্য অনেকেই জীবন দিয়েছেন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য শেষে কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। শিবির সভাপতি তরুণ প্রজন্মকে দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান এবং প্রোপাগান্ডা বা নেতিবাচক রাজনীতিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন।