ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চাঁদাবাজি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে, যেখানে পুরস্কার, বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারের অদ্ভুত নীতি চলছে।
কিশোরগঞ্জের আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে অনুষ্ঠিত এক জনসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বিএনপির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি দেশে এক অদ্ভুত নীতি চালু করেছে—"চাঁদা তুললে পুরস্কার, ধরা পরলে বহিষ্কার আর ভাইরাল হলে গ্রেপ্তার"।
রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে কিশোরগঞ্জ জেলা ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফয়জুল করীম বলেন, দেশের গণতন্ত্রের কাঠামো পরিবর্তনের জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, আর সেই পরিবর্তনের মূল পথ হচ্ছে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন।
তিনি দাবি করেন, দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে ভোট আয়োজনের পক্ষে। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সব দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে, যা গণতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা করবে। তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে আলাদা একটি ভোট বাক্স রাখা উচিত, যাতে ইসলামের সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট দিতে পারেন।
বিএনপির সমালোচনায় ফয়জুল করীম বলেন, “তারা দেশে লুটপাটের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। সিলেটে শত শত কোটি টাকার সাদা পাথর লুট করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেবল ক্ষমতা দখলের জন্য তারা যেনতেন নির্বাচন চাইছে, যাতে দেশে আরেকটি ফ্যাসিবাদী শাসন চাপিয়ে দেওয়া যায়।”
জুলাই মাসে সংঘটিত অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এটি কেবল একটি নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলন ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্র সংস্কার, অপরাধীদের বিচার এবং পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিশ্চিত করা। পিআর ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না।”
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন, ফরিদপুরের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, আজিজুর রহমান জার্মানিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। সমাবেশে বক্তারা একযোগে দাবি জানান, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন না করলে দেশের রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হবে।
জনসমাবেশ শেষে ফয়জুল করীম স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে বলেন, ইসলামী আন্দোলন দেশের সকল মানুষের অধিকার ও ন্যায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।