দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রবীণ সাংবাদিক আলমগীর মহীউদ্দীনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বিএফইউজে ও ডিইউজে। তাঁর অবদানকে সাংবাদিক সমাজ চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অঙ্গন আজ গভীর শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন। দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর পরিচালনা বোর্ডের সদস্য আলমগীর মহীউদ্দীন ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, যা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।
শনিবার (২৩ আগস্ট) এক যৌথ শোকবার্তায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, আলমগীর মহীউদ্দীন শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের অগ্রসৈনিক এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার এক নির্ভীক যোদ্ধা। সাংবাদিকতার সত্যনিষ্ঠ চর্চায় তাঁর অবদান ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
বিবৃতিতে বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন—“আলমগীর মহীউদ্দীনের মৃত্যুতে আমরা এক মহান শিক্ষক, অভিভাবক এবং আলোকবর্তিকার মতো এক ব্যক্তিত্বকে হারালাম। সাংবাদিক সমাজে তাঁর অবদান ছিল অসামান্য, আর জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে তিনি ছিলেন অকুতোভয়।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীর মহীউদ্দীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
দেশের সাংবাদিকতা অঙ্গনে আলমগীর মহীউদ্দীনের ভূমিকা সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল সাহস, ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান আর সত্যের প্রতি আপসহীন এক যাত্রাপথ। তিনি কখনো ভয় পাননি, কখনো আপস করেননি। সাংবাদিকতার পেশাগত নীতি ও সততার যে দৃষ্টান্ত তিনি রেখে গেছেন, তা আগামী প্রজন্মের সাংবাদিকদের পথ দেখাবে।
সাংবাদিক মহলে শোকের পাশাপাশি তাঁকে নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ চলছে। সহকর্মীরা বলছেন, আলমগীর মহীউদ্দীন ছিলেন সাংবাদিক সমাজের জন্য এক ছায়াতরু। তাঁর হাত ধরে বহু তরুণ সাংবাদিক দীক্ষিত হয়েছেন, যাঁরা আজ দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
সাংবাদিক সমাজ মনে করে, আলমগীর মহীউদ্দীন ছিলেন শুধু একজন সংবাদকর্মী নন, বরং ছিলেন একজন আদর্শবাদী মানুষ, যিনি জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ কলম গণমানুষের কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরেছে।
তাঁর মৃত্যুতে বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ মরহুমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, “আমরা দোয়া করি মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সহ্য করার শক্তি দান করুন।”
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে আলমগীর মহীউদ্দীনের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সত্যের পক্ষে কলম চালানো এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে যাওয়া এই মানুষটি প্রমাণ করে গেছেন—একজন সাংবাদিকের প্রকৃত শক্তি হলো তাঁর সততা ও সাহস।