দুই কিংবদন্তি সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দীন ও বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যুতে বন্দর প্রেসক্লাব শোক প্রকাশ করেছে। তাঁদের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগৎ শোকে আচ্ছন্ন। দেশের দুই বর্ষীয়ান সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দীন ও খ্যাতিমান কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যুতে বন্দর প্রেসক্লাব গভীর শোক প্রকাশ করেছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদ এক শোকবার্তায় তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
গত শনিবার (২৩ আগস্ট) দেওয়া ওই শোকবার্তায় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, আলমগীর মহিউদ্দীন ও বিভুরঞ্জন সরকার ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিকতার এমন দুই আলোকবর্তিকা, যাঁদের সাহসী অবস্থান ও বস্তুনিষ্ঠ লেখনী সর্বদা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাঁরা শুধু কলম চালাননি, বরং সত্যকে তুলে ধরতে এবং জনগণের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে আলমগীর মহিউদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতার উৎকর্ষে ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর লেখনীতে উঠে এসেছে সমাজের বঞ্চিত মানুষের কথা, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া। তিনি ছিলেন সাংবাদিক সমাজের এক অবিসংবাদিত পথপ্রদর্শক। একইভাবে বিভুরঞ্জন সরকার কলামিস্ট হিসেবে সমাজের নানা অসঙ্গতি নির্ভীকভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর বিশ্লেষণধর্মী লেখা ও প্রজ্ঞাময় মন্তব্য পাঠকসমাজকে সবসময় চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।
বন্দর প্রেসক্লাব মনে করে, তাঁদের মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম একটি অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে। বর্তমান সংকটময় সময় সাংবাদিকতা যে সাহসী কণ্ঠ হারাল, তা পূরণ হওয়ার নয়। আলমগীর মহিউদ্দীন ও বিভুরঞ্জন সরকার দু’জনই ছিলেন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব, যাঁদের জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সাংবাদিকদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।
প্রেসক্লাবের শোকবার্তায় বলা হয়, “তাঁদের মৃত্যু কেবল সাংবাদিক সমাজের নয়, বরং সমগ্র জাতির জন্য এক বড় ক্ষতি। আমরা তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং আল্লাহর দরবারে দোয়া করি যেন শোকাহত পরিবারগুলো এই শোক সহ্য করার শক্তি পান।”
সাংবাদিক সমাজের কাছে এই মৃত্যু শুধু পেশাগত ক্ষতি নয়, ব্যক্তিগত বেদনারও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, তাঁরা ছিলেন এমন মানুষ যারা সারা জীবন ন্যায়, সত্য ও মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়ে গেছেন। তাঁদের স্মৃতি আগামী দিনে সাংবাদিকতার দিকনির্দেশনা হিসেবে অম্লান হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে আলমগীর মহিউদ্দীন ও বিভুরঞ্জন সরকারের নাম চিরদিন সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হবে। তাঁদের রেখে যাওয়া আদর্শ, সংগ্রামী মনোভাব এবং সত্য প্রকাশের অঙ্গীকার আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মকে সাহস যোগাবে।