close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

‘ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানি করা যাবে ১২০-১২৫ টাকায়’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Beef prices in Bangladesh may finally come down, as importing from Brazil at only Tk 120-125 per kg could bring huge relief to consumers.

বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম লাগামহীন। তবে ব্রাজিল থেকে মাত্র ১২০-১২৫ টাকায় আমদানির সুযোগ খুললে বাজারে বড় ধরণের স্বস্তি আসতে পারে।

বাংলাদেশে প্রতিদিনের বাজারে গরুর মাংসের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি জেলায় খুচরা বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়। গত কয়েক মাস ধরে মাংসের দাম বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সপ্তাহে একদিনও গরুর মাংস কেনা কঠিন মনে করছে।

এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানির বিষয়টি। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের দাবি, ব্রাজিল থেকে সরাসরি মাংস আমদানি করলে খরচ পড়বে কেজি প্রতি মাত্র ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশের বর্তমান বাজার মূল্যের তুলনায় প্রায় সাতগুণ কম দামে আমদানির সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যদি সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং নিয়ম-কানুন সহজ করে, তবে দেশের ভোক্তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি বড় স্বস্তির খবর।

বাংলাদেশে গবাদি পশুর সংখ্যা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদন কম হওয়ায় প্রতিবছর কোরবানির ঈদ ছাড়া অন্য সময়ে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চোরাই পথে ভারতীয় গরু আসার প্রবণতাও অনেক কমে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা মূলত স্থানীয় খামারিদের কাছ থেকে গরু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। উৎপাদন কম, পরিবহন খরচ বেশি— সব মিলিয়ে বাজারে মাংসের দাম ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

অন্যদিকে ব্রাজিল বিশ্বের অন্যতম বড় গরুর মাংস রপ্তানিকারক দেশ। সেখানকার মাংসের দাম অনেক কম। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক দামে বিক্রি করায় বাংলাদেশ যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় আমদানির অনুমতি দেয়, তবে দেশে সহজেই সস্তা মাংস পৌঁছানো সম্ভব। তবে এজন্য কিছু জটিলতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা, হালাল জবাইয়ের শর্ত, কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় খামারিদের স্বার্থরক্ষার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।

বাংলাদেশের মাংস আমদানিকারক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, ব্রাজিল থেকে মাংস আমদানির খরচ পড়বে কেজি প্রতি মাত্র ১২০-১২৫ টাকা। এর সাথে পরিবহন খরচ, শুল্ক ও ভ্যাট যোগ হলেও খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৩৫০-৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ এখনকার দামের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কম দামে মানুষ গরুর মাংস কিনতে পারবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, যদি সরকার পরিকল্পিতভাবে আমদানির ব্যবস্থা করে, তবে বাজারে স্বস্তি আসবে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। তবে এর একটি নেতিবাচক দিকও থাকতে পারে— স্থানীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কারণ তারা উচ্চ খরচে গরু লালন-পালন করে বিক্রি করছেন। যদি সস্তা দামের আমদানি শুরু হয়, তবে তাদের উৎপাদন খরচ তুলতে সমস্যা হবে। তাই সরকারকে ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ভোক্তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে লিখছেন— "যদি ১২০ টাকায় মাংস পাওয়া যায়, তবে প্রতিদিনই রান্নায় গরুর মাংস থাকবে।" আবার কেউ কেউ শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন— বিদেশ থেকে আসা মাংসের মান কেমন হবে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

সামগ্রিকভাবে বলা যায়, ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানির উদ্যোগ যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশের ভোক্তা বাজারে নতুন অধ্যায় সূচিত হবে। উচ্চমূল্যের কারণে এতদিন যেসব পরিবার মাংস কিনতে পারতেন না, তারাও সহজেই কিনতে পারবেন। তবে স্থানীয় উৎপাদন খাত ও খামারিদের স্বার্থও রক্ষা করতে হবে, যাতে বাজারে দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য বজায় থাকে।

No se encontraron comentarios