খান মোঃ আঃ মজিদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার পুরাতন গুচ্ছগ্রাম আবাসনে আলোচিত এক ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি সদস্য পরিচয়দানকারী মীরা কাশ্মীরী। ভুক্তভোগী আশা আক্তারের কল রেকর্ডের স্বীকারোক্তি অভিযোগ উঠেছে, মিরা কাশ্মীরি আমাদের ঘরের মূল্যবান মালামাল দখল করেছেন। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে—যা নিয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, কুখ্যাত ইউপি সদস্য মীরা কাশ্মীরী ও তার সহযোগীদের কারণে শুধু আশা আক্তার নয়, আরও অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেকে ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। অল্পবয়সী কিশোরীদের পিতা-মাতাকে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের দেনমোহর ধার্য করা হয় এবং জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিবাহিত নারীদের স্বামীর ঘর থেকে বের করে এনে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, আশা আক্তার ও তার পরিবারকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রথমে ‘বডিগার্ড’ হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন মেরা কাশ্মীর। তিনি ভুক্তভোগীকে বলেন, “আমরা তোমার পাশে আছি, তোমার স্বামী আব্দুল মজিদ খান কিছুই করতে পারবে না।” কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশা আক্তার ও তার পিতা-মাতা নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় মীরা কাশ্মীরী একা নন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন—
স্বামী আব্দুল আলিম (৪০),
দেহরক্ষী আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরী (৫৫), পিতা মৃত মছির উদ্দিন,
তারা সবাই এলাকায় ক্ষমতাশালী হিসেবে পরিচিত এবং বিভিন্ন বিচার-আচার পরিচালনার আড়ালে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ও দেহ ব্যবসায়ীদের ইন্ধনদাতা এবং পরামর্শকারী হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন মীরা কাশ্মীরী। এদের মধ্যে কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাদের ছাড়িয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা করেন তিনি।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য সরকারি অনুদান বরাদ্দ এলেও মীরা কাশ্মীরী তা বন্টন না করে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আওয়ামী লীগের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তিনি যা খুশি তাই করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সূত্রমতে, বোচাগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রমাণ ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে গত ৫ই আগস্ট থানা ঘেরাও করে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ধ্বংস হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর দাবি, একাধিক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের পালাতে সহযোগিতা করেছেন মীরা কাশ্মীরী ও তার দলবল। রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় থেকে তারা অপরাধীদের সুরক্ষা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, যদি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় তবে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে। এ বিষয়ে সেতাবগঞ্জ পৌরসভা ও বোচাগঞ্জ উপজেলার সচেতন মহল পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মা থাকতে যারা তিন শিশু কন্যাকে এতিম করেছে—তাদেরকে অবশ্যই আইনের মাধ্যমে দিনাজপুর কোর্ট-আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে বলে দাবি করেছে এলাকাবাসী।